ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ শীঘ্রই শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। ইউক্রেনের সংবাদমাধ্যম সাসপিলনেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এটা নিশ্চিত যে হোয়াইট হাউসের নেতৃত্বদানকারী দলের নীতির কারণে যুদ্ধ শেষ হবে। এটিই নতুন নেতৃত্বের দৃষ্টিভঙ্গি এবং নাগরিকদের প্রতি প্রতিশ্রুতি।’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির আশা, ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব নেওয়ার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটবে।তিনি নিশ্চিত, এবার যিনি হোয়াইট হাউসকে নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন, তাঁর নীতিই হল দ্রুত যুদ্ধ শেষ করা। তিনি আরও বলেন, ‘যুদ্ধ শেষ হবে, কিন্তু আমরা সঠিক তারিখ জানি না।’ জেলেনস্কি আগেই বলেছিলেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভের পর ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে কথোপকথনের সময় তাঁদের মধ্যে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছিল। তিনি বলেছেন ‘আমি এমন কিছু শুনিনি যা আমাদের অবস্থানের বিরুদ্ধে যায়।’
নির্বাচনী প্রচারাভিযান জুড়ে ট্রাম্প রাশিয়ার আক্রমণ শুরুর পর থেকে ইউক্রেনের জন্য ব্যয় হওয়া অর্থসাহায্য নিয়ে বারবার সমালোচনা করে এসেছেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে ক্ষমতায় আসার ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই সংঘাতের সমাধান করবেন। গত শুক্রবার ফ্লোরিডার পাম বিচে তাঁর মার-এ-লাগো রিসোর্টে ভাষণ দিতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা রাশিয়া এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে কঠোর পরিশ্রম করতে যাচ্ছি। এটা বন্ধ করতে হবে।’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, আমেরিকায় এ বারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের নেপথ্যে অন্যতম কারণ হিসাবে কাজ করেছে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরেও তাঁর বিজয় ভাষণে ট্রাম্প আশ্বাস দিয়েছিলেন, তিনি নতুন করে কোনও যুদ্ধ শুরু করবেন না। বরং যুদ্ধ থামাতে সাহায্য করবেন।
যুদ্ধ বন্ধের জন্য এর আগে জেলেনস্কি লন্ডন, প্যারিস এবং রোম সহ ইউরোপীয় রাজধানী গুলিতে দুই দিনের ঘূর্ণিঝড় সফর করেছিলেন। , জেলেনস্কি দেখা করেছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজের সঙ্গে। ইউক্রেনের নেতাকে সমর্থন করে জার্মানি, এবং ইউক্রেনকে সহায়তা করা থেকে তারা বিরত থাকবেনা সেকথাও স্পষ্ট করা হয়। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ বলেন, ‘ইউক্রেনকে সাহায্য করা পরের বছরও কমবে না। ‘ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের অন্য কারো চেয়ে ইউক্রেন এই যুদ্ধের সুষ্ঠু ও দ্রুত সমাপ্তি চায়। যুদ্ধ আমাদের দেশকে ধ্বংস করছে, আমাদের মানুষের প্রাণ নিচ্ছে।’ জার্মান চ্যান্সেলর রাশিয়া-সহ একটি শান্তি সম্মেলনের প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দিয়েছিলেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন যে ‘আমরা রাশিয়ার দ্বারা পরিচালিত শান্তি মেনে নেব না। শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে শান্তি আনা যেতে পারে।’
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি কিভের বিরুদ্ধে ‘সামরিক অভিযানের’ ঘোষণা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইউক্রেনের উপর ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিমান হামলা চালিয়েছিল রুশ বাহিনী। পাশাপাশি, স্থল এবং জলপথেও শুরু হয়ে যায় আক্রমণ। সেই যুদ্ধ এখনও অব্যাহত রয়েছে। ফলে ইউক্রেনের এখন ভরসা ওয়াশিংটনের কাছ থেকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা।