মায়ানমারে ভূমিকম্পের জেরে মৃত্যু মিছিল ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৬। এর মধ্যে ৬০ ঘণ্টা পর ধ্বংসস্তূপের নীচে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এক জীবিত তরুণীকে।
ক্ষমতাসীন জুন্টা সোমবার জানিয়েছে, ৩ হাজার ৯০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। জুন্টা মুখপাত্রের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে শুক্রবারের ভূমিকম্পের তিন দিন পরে এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ২৭০ জন। এদিকে ভূমিকম্পে মায়ানমারে মৃতদের মধ্যে ৩ জন চিনের নাগরিক। এমনটাই জানিয়েছে চিনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। ফ্রান্সের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ২ জন ফ্রান্সের নাগরিক মারা গিয়েছেন।
এদিকে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত মান্দালয়ে তাপমাত্রা মাত্রা ৪০ ছাড়িয়েছে। প্রচন্ড গরমে ভেসে আসছে লাশের পচা গন্ধ। সেই সব পচা লাশ সরানোর মতো লোকবল নেই। হাসপাতালগুলিতে কোনও জায়গা নেই। নেই জল, খাবার। প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক বা নার্সের সংখ্যাও কম। এরই মধ্যে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নিজের প্রিয়জনকে খোঁজার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন অনেকেই। ভেঙে পড়া বড় বড় চাঙড় সরিয়ে খুঁজে বের করা অসাধ্য। তবুও তাঁদের চেষ্টার বিরাম নেই। আকাশচুম্বী ধ্বসংস্তূপের মধ্যে জীবনের চিহ্ন দেখতে পেয়ে সাবধানে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে বের করে আনার মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় মানুষ। এরই মধ্যে চীনের সিনহুয়া সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, উদ্ধারকারীরা মান্দালয়ে ধসে পড়া ভবন থেকে একজন গর্ভবতী মহিলা এবং একটি মেয়ে-সহ চারজনকে উদ্ধার করেছেন।
মায়ানমারের চিনা দূতাবাসের ফেসবুকে জানানো হয়েছে, একটি হোটেলের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে এক মহিলাকে। ওই মহিলা প্রায় ৬০ ঘণ্টা চাপা পড়েছিলেন মান্দালয়ের একটি হোটেলের ধ্বংসস্তূপের নিচে। দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা ধরে উদ্ধারকাজ চালিয়ে সোমবার সকালে টেনে বের করে আনা হয় ওই মহিলাকে। প্রাণ বাঁচানোর আনন্দে শোকের আবহেও হাততালি দিয়ে ওঠেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত সবাই। তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আপাতত তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।এই ঘটনায় আশার আলো দেখেছেন মায়ানমারবাসী। নতুন উৎসাহে শুরু হয়ে গিয়েছে উদ্ধারকাজ। তবে গোটা মায়ানমারের পরিস্থিতি ভয়াবহ। বহু মানুষের মৃতদেহ এখনও চাপা পড়ে রয়েছে ধ্বংসস্তূপের নিচে। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা উদ্ধারকারীদের।