টোকিও, ২৪ জানুয়ারি– জাপানে নতুন ইতিহাসের সূচনা করল ফুমিও কিশিদার সরকার৷ ‘নেকেড ফেস্টিভ্যাল’ বা ‘উলঙ্গ উৎসব’-এ ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত জাপান সরকারের৷ রীতি মেনে প্রতি বছরই জাপানে সাড়ম্বরে পালিত হয় ‘নেকেড ফেস্টিভ্যাল’ বা ‘উলঙ্গ উৎসব’৷ একেবারে নামমাত্র পোশাকে মন্দিরের সামনে জমায়েত হয় পুরুষেরা৷ ১৬৫০ বছরের ইতিহাস পরিবর্তিত ঘটিয়ে এবার পুরুষদের সঙ্গে এই উৎসবে সামিল হতে পারবে মহিলারাও৷ বহু আবেদন, অনুরোধের প্রেক্ষিতেই এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাপান সরকার৷
ভাল ফসল উৎপাদন ও সমৃদ্ধির জন্য এই উৎসব পালন করে জাপানের ইনাজাওয়ার পুরুষেরা৷ যা জাপানে ‘হাদাকা মাৎসূরী’ উৎসব নামেও পরিচিত৷ এটি মূলত ফসল উৎসব৷ অর্থাৎ কনকনে ঠান্ডার মধ্যেই পুরুষেরা প্রায় উলঙ্গ হয়ে, ‘লয়েন’ পোশাক এবং সাদা মোজা পরে সাইদাইজি মন্দিরের সামনে জড়ো হন এবং কয়েক ঘণ্টা মন্দিরের চারপাশে দৌড়াদৌডি় করেন৷ তারপর তাঁরা হিমশীতল জলে স্নান করে মূল মন্দিরের সামনে গিয়ে দাঁড়ান৷ এরপর মন্দিরের পুরোহিত মন্ত্রপুত ১০০টি লাঠি জমায়েত হওয়া হাজার-হাজার ভক্তের উদ্দেশে ছুডে় দেন৷ তার মধ্য থেকে দুটি ভাগ্যবান লাঠি নিতে হুড়োহুডি় পডে় যায় সকলের মধ্যে৷ বলা ভাল, রীতিমতো সংঘর্ষে লিপ্ত হয় সকলে৷ বিশ্বাস, ওই ভাগ্যবান লাঠি যার দখলে যাবে, তার গোটা বছরটি ভাল কাটবে৷ দীর্ঘ লড়াইয়ের পর মন্দিরের তরফে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হয় এবং ভগবানের আশীর্বাদ নিয়ে প্রত্যেকে বাডি় ফিরে যায়৷
এতদিন এই উৎসবে কেবল পুরুষদেরই এই উৎসবে সামিল হওয়ার অধিকার ছিল৷ মহিলাদেরও এই উৎসবে সামিল হওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আবেদন জানানো হচ্ছিল৷ অবশেষে ৪০ জন মহিলাকে উলঙ্গ উৎসবে সামিল হওয়ার অনুমতি দিল জাপান সরকার৷
তবে মহিলাদের নেকেড উৎসবে সামিল হওয়ার অনুমতি দিলেও বিশেষ শর্ত আরোপ করেছে জাপান সরকার৷ নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, মহিলারা সম্পূর্ণ পোশাকে থাকবে এবং ঐতিহ্যবাহী হ্যাপি কোট পরতে হবে৷ পুরুষদের মতো তারা সংঘর্ষে লিপ্ত হতে পারবে না৷ কেবল নোয়াইজাসা’ রীতি পালন করবেন৷ এই রীতি অনুযায়ী মহিলারা শুধু মাঠে কাপডে় মোড়ানো বাঁশের ঘাস বয়ে নিয়ে যেতে পারবেন৷
নির্দিষ্ট তিথি মেনে চলতি বছর ২২ ফেব্রুয়ারি উলঙ্গ উৎসব পালিত হবে৷ প্রায় ১০ হাজার স্থানীয় পুরুষ এই উৎসবে সামিল হবে বলে মনে করছে আয়োজক কমিটি৷