একেই বলে বোধহয় বিলম্বিত বোধোদয়। হাসিনা সরকার দেশ ছাড়ার পর থেকেই বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন লাগাতার বাড়ছিল। এই নির্যাতনের কারণে বারবার নিন্দিত হচ্ছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস। এমনকি আমেরিকাও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে জানিয়েছিলো এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে সদর্থক পদক্ষেপ নিতে। অবশেষে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনে ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে ইউনূসের সরকার। সংখ্যালঘুদের সাহায্য করার জন্য পুলিশের একটি বিশেষ হোয়াট্সঅ্যাপ নম্বরও চালু করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। দেশের যে কোনো জায়গায় সংখ্যালঘুরা নিরাপত্তাহীনতা বোধ করলে এই নম্বরে যোগাযোগ করতে পারবেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেবে। নির্যাতনের ঘটনায় যাঁরাই যুক্ত থাকুক না কেন,অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশের সরকার।
এর আগেই বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ দাবি করেছিলো, ৪ অগস্ট থেকে এখনও পর্যন্ত সারা দেশে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটেছে মোট ২০১০টি। এই অভিযোগগুলির মধ্যে ১,৭৬৯টি ঘটনার অভিযোগ থানায় দায়ের করা হয়েছে। তবে অভিযোগ দায়ের করার পরও বাংলাদেশ পুলিশ অনেক অভিযোগকেই গুরুত্ব দেয়নি। সমস্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৬২টি মামলা রুজু করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্তত ৩৫ জন অভিযুক্তকে।
এই পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের দাবি, বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর হামলার বিষয়টি অতিরঞ্জিত করা দেখানো হচ্ছে।পুলিশের একটি রিপোর্ট উল্লেখ করে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। তার বক্তব্য, এই হামলার বেশিরভাগই রাজনৈতিক কারণে হয়েছে, সাম্প্রদায়িক কারণে হয়নি।
মুহাম্মদ ইউনূসের রিপোর্টকে মান্যতা দিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজ়াদ মজুমদার শনিবার দাবি করেছেন, ‘এই সংখ্যালঘু নিগ্রহের ঘটনাগুলি অধিকাংশই রাজনৈতিক। এর নেপথ্যে সাম্প্রদায়িক উস্কানির যে অভিযোগ করা হচ্ছে তার বিন্দুমাত্র সত্যতা নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশি তদন্তে দেখা যাচ্ছে ১,২৩৪টি ঘটনা রাজনৈতিক। মাত্র ২০ টা ঘটনা সাম্প্রদায়িক।’ এছাড়া পুলিশের দায়ের করা অভিযোগের মধ্যে ১৬১টি অভিযোগ পুরোপুরি অসত্য বলেও দাবি করেছে ইউনূস সরকার। তবে এবার পুলিশের দেওয়া বিশেষ হোয়াট্সঅ্যাপ নম্বরে অভিযোগ এলে পুলিশ কতটা তৎপর হয়, সেটাই এখন দেখার।