রাজপরিবারের ব্যাপার স্যাপার তাে সাধারণ মানুষের থেকে আলাদা হবেই। হাজার হােক রাজপরিবারের সদস্যরা বংশানুক্রমিকভাবেই অন্যান্যদের থেকে আভিজাত্য ও বৈভবে এগিয়ে থাকেন। বড়দিনে যেখানে সাধারণ পরিবারেও সাধ্যমতাে ভােজের আয়ােজন করা হয়ে থাকে, সেখানে রাজপরিবারের আয়ােজন যে চোখ ধাধানাে হবে তা বলাই বাহুল্য।
কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিস্ময়ের কারণটা একটু অন্য। পরিবারে অন্য সদস্যদের নিয়ে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ’ও ৯৪ বছর বয়সে বড়দিনের পুরাে মুহূর্তটা ঘিরে যেভাবে ভােজনে মগ্ন থকে, তা একটু অবাক করে দেওয়ার মতােই ঘটনা। অবশ্য ভেবে দেখলে রানির এই ভােজনের একটা ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। প্রথমত দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি এই ধরনের বিলাসী ভােজন ব্যবস্থায় অভ্যস্থ। দ্বিতীয়ত সবার ওপরে থাকে মান্যতা দিয়ে থাকেন তিনি।
রাজপরিবারের প্রথা মেনে রানি ও রাজপরিবারের অন্যান্য সদস্যরা কী খেয়ে থাকেন, সম্প্রতি সে কথা হ্যালাে নামে একটি পত্রিকাকে সাক্ষাৎকরে জানিয়েছেন রাজপরিবারের প্রাক্তন রাঁধুনি ড্যারেন ম্যাকগ্রাড়ি। তাঁর বক্তব্য, নিঃসন্দেহেই বড়দিনের নৈশভােজ হয়ে থাকে রীতিমতাে জমকালাে। তবে মধ্যাহ্নভেজটা মােটের ওপর সাদামাটাই হয়।
এলিজবেথ তাে বটেই, যুবরানি ডায়নার জন্যও এক সময় রেধেছেন ড্যারেন। সেই অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেছেন, বাধাধরা নিয়মে বড়দিনের দুপুরে ব্রিটেনের এই রাজ পরিবার টার্কি রােস্ট খেয়ে থাকে। একটি টার্কি রােস্ট করা হয় রানি ও তাঁর পরিবারের জন্য। আরেকটি টার্কি বাচ্চাদের নার্সারির জন্য। আরও কতগুলাে টার্কি প্রাসাদের বাকিদের জন্য বরাদ্দ থাকে।
এরপর বিকেলে চায়ের পালা। নানা রকমের অ্যাসরটেড কেক, স্যান্ডউইচের সঙ্গে ক্রিসমাস কেক এই সময় সবাই খেয়ে থাকেন।
রাত নামলে টেবিলে একের পর এক সুখাদ্য বিছিয়ে দেন রাধুনিরা। ড্যারেন বলেছেন, প্রতি বছর নৈশভােজের তালিকায় ফোয়া গুরা আন ক্রুট থাকবেই। স্টিলটন চিজ সহযােগে এই ট্রাফল উপভােগ করে রাজ পরিবার। এই ট্রাফল আসে হ্যারডস-এর দোকান থেকে।
ড্যারেন এই প্রসঙ্গে দুটি অজানা কথা জানিয়েছেন। খাওয়ার শুরুতে রানি ও পরিবারের অন্যান্যরা রাঁধুনিদের উদ্দেশ্যে টোস্ট করে কৃতজ্ঞতা জানান। অর্থাৎ ওয়াইনের গ্লাস তুলে ধরে তারা রাধুনিদের স্বাস্থ্যকামনা করে তবেই খাওয়া শুরু করেন।
দ্বিতীয় তথ্যটি মিষ্টিমুখ নিয়ে। ড্যারেন বলেছেন, প্রতি বছরেই বড়দিনের ডেসার্টে সুফলে থাকে। যুবরানি ডায়না এই পদটি খুব ভালােবাসেন। সবার খাওয়া হয়ে গেলে তাই তিনি নিয়মিত হানা দিতেন রান্নাঘরে। খোঁজ নিতেন সুফলে বেঁচে গিয়েছে কিনা।