• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

জলবায়ু পরিবর্তন রোধে অর্থ বরাদ্দে সহমতের জন্য রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিবের আহ্বান

আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে এখন রাষ্ট্রসঙ্ঘের যে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন চলছে, তাতে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বিশ্বব্যাপী যে অর্থের প্রয়োজন, সেই তহবিল গঠন নিয়ে আলোচনায় উন্নতিশীল দেশের প্রতিনিধিরা চাইছেন এর জন্য উন্নত দেশগুলো বেশি অর্থ দিক।

রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব আন্তোরিও গুয়েত্রেস। ফাইল চিত্র

স্নেহাশিস সুর, বাকু– 

রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব আন্তোরিও গুয়েত্রেস বাকুতে জলবায়ু বিশ্ব সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বিভিন্ন দেশের অর্থ বরাদ্দের ব্যাপারে মতৈক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। রিওতে জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির রাষ্ট্রনেতাদের শীর্ষ সম্মেলন সেরে বৃহস্পতিবার সরাসরি বাকুতে জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি একথা বলেন।
এমন সময় রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব সব দেশকে সহমতের আহ্বান জানালেন, তখন বাকুর জলবায়ু সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের আলোচকরা এ বিষয়ে কোন দেশ কত অর্থ দেবে, তার জন্য দর কষাকষি করছেন। মহাসচিব বলেন, এ বিষয়ে বিভিন্ন দেশের মধ্যে এখনও অনেক মতপার্থক্য রয়েছে। তাই সাফল্য যে সুনিশ্চিত, এখনই তা বলা যাচ্ছে না। সময় হাতে খুবই কম। সবাইকে নিজের নিজের অবস্থান থেকে সরে এসে ধরিত্রীকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে অনেক বেশি অর্থ বরাদ্দের জন্য একমত হতে হবে।

অন্যদিকে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে এখন রাষ্ট্রসঙ্ঘের যে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন চলছে, তাতে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বিশ্বব্যাপী যে অর্থের প্রয়োজন, সেই তহবিল গঠন নিয়ে আলোচনায় উন্নতিশীল দেশের প্রতিনিধিরা চাইছেন এর জন্য উন্নত দেশগুলো বেশি অর্থ দিক। কারণ, বিশ্বের বর্তমান দূষণ পরিস্থিতির জন্য মূলত সেই শিল্পোন্নত দেশগুলিই দায়ী। আর অন্যদিকে উন্নত দেশগুলি এখন সরকারি অর্থ বরাদ্দের বদলে বেসরকারি, স্বেচ্ছাসেবী, প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাঙ্ক সহ বিভিন্ন আর্থিক সংস্থাগুলিও যেন অর্থ দেয়, তার জন্য সুপারিশ করেছে।

এই প্রথম রাষ্ট্রসঙ্ঘের বার্ষিক জলবায়ু সম্মেলনে সামগ্রিকভাবে অর্থ বরাদ্দের জন্য আলাদা করে একটি তহবিল গড়ার কথা হচ্ছে। এর নাম ‘নিউ কালেক্টিভ ও কোয়ান্টিফায়েড গোল’ (এনসিকিউজি) অর্থাৎ নতুন সম্মিলিত ও পরিমিত লক্ষমাত্রা। এর আগে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা, এর জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থার পরিবর্তন করা এবং এরজন্য যে ক্ষয়ক্ষতি ইতিমধ্যেই হয়ে গেছে, তা সামাল দিতে পৃথক পৃথক ভাবে অর্থ বরাদ্দ হতে।তবে এই প্রথম সেটি সামগ্রিকভাবে হবে।

এই তহবিলে কোন দেশ কত টাকা দেবে, তা নিয়ে এখন চূড়ান্ত দর কষাকষি চলছে। এবারের কপ-২৯-কে সকলে আর্থিক কপ বলেই চিহ্নিত করেছে। তহবিল গঠনের যে লক্ষমাত্রার কথা শোনা যাচ্ছে তার পরিমাণ বছরে এক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে এই পরিমাণ আসলে কত দাঁড়ায়, এখন সেটাই দেখার। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা বা অ্যাডপ্টশন তহবিলে বরাদ্দের যে পরিমাণ সর্বশেষ খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে, তা প্রতি বছর ২১৫ থেকে ৩৮৭ মার্কিন ডলার হতে পারে।
এছাড়া বিভিন্ন দেশের ন্যাশনালি ডিটারমিন্ড কন্ট্রিবিউশন বা (এনডিসি)-র মোট পরিমাণ আগামী পাঁচ বছরের জন্য ৫ থেকে ৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে। সেই সঙ্গে

পরিমণ্ডলে কার্বন নির্গমণের ভারসাম্য ২০৫০ সালের মধ্যে শূন্যে নিয়ে আসার যে লক্ষমাত্রা নেওয়া হয়েছে (নেট জিরো) তার জন্য ২০৩০ সাল পর্যন্ত চার ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং পরবর্তী পর্যায়ের জন্য ছয় ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দের কথা এনসিকিউজি-র সর্বশেষ খসড়াপত্রে উল্লেখ
করা হচ্ছে। এখন চূড়ান্ত বরাদ্দ ঘোষণার অপেক্ষা।