• facebook
  • twitter
Thursday, 26 December, 2024

অস্ত্র ও কর ফাঁকি মামলায় পুত্রকে ক্ষমা করে দিলেন জো বাইডেন, বিদ্রূপ করলেন ট্রাম্প

ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর একটি কলঙ্কজনক পারিবারিক মামলা তাড়া করার আশঙ্কায় দোষী সাব্যস্ত ছেলে হান্টারকে ক্ষমা করে দিয়ে গেলেন। যার ফলে ছেলে এই দুই মামলায় কারাদণ্ডের হাত থেকে বেঁচে গেলেন।

জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল চিত্র

অস্ত্র ও কর ফাঁকি মামলায় ছেলে হান্টারকে ক্ষমা করলেন আমেরিকার বিদায়ী রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন। ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার শেষ মুহূর্তে তাঁর এই ক্ষমা প্রক্রিয়ায় সম্মতিকে বিদ্রূপ করেছেন ভাবী রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বিষয়টি নিয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করেছেন। দেলওয়ারে অস্ত্র সংক্রান্ত মামলা এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় কর ফাঁকি সংক্রান্ত মামলায় আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়া পুত্র হান্টারকে রবিবার মুক্ত করে দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত এর আগে হান্টার বাইডেনের এই মামলায় ছেলেকে ক্ষমা করবেন না বলে ধনুক ভাঙা পণ করেছিলেন বাবা জো বাইডেন। কিন্তু নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর তাঁর সেই চিন্তায় বদল এসেছে। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর বিষয়টি জটিল পর্যায়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কায় করেছেন। এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তা না হলে তিনি এতবড় দুর্নীতিতে নিয়মের উর্ধে গিয়ে হান্টারকে কেন ক্ষমা করতে যাবেন?

যদিও বিষয়টি নিয়ে বিরোধী দলের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনেক কাঁটাছেড়া করেছেন। তিনি এই অস্ত্র দুর্নীতি নিয়ে অন্যরকম ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি ২০২০ সালে ভোটে কারচুপি করেছেন বিদায়ী রাষ্ট্রপতি ও তাঁর দলের বিরুদ্ধে। সেইসঙ্গে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি হামলার ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, তাঁর (বাইডেনের) এই ক্ষমার তালিকায় ৬ জানুয়ারি হামলার ঘটনায় যাঁরা বছরের বছর ধরে কারারুদ্ধ রয়েছেন, তাঁরা কি রয়েছেন?

প্রসঙ্গত ২০২০ সালের নির্বাচনের পর তিনি একটি শোভাযাত্রা করে দাবি করেন, তিনি ২০২০ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। কিন্তু তাঁর থেকে ভোট চুরি করে নেওয়া হয়েছে। সেসময় ট্রাম্পের কিছু সমর্থক তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এবং কংগ্রেসের সদস্যদের হুমকি দিয়ে ক্যাপিটলে আক্রমণ করেছিল। কারণ তাঁরা বিডেনের নির্বাচনকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। ট্রাম্প এইসব দাঙ্গাবাজদের রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে বিচার করে ‘জিম্মি’ করা হয়েছে। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর তাঁদের ক্ষমা করে দেবেন বলেও দাবি করেছেন।

ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর একটি কলঙ্কজনক পারিবারিক মামলা তাড়া করার আশঙ্কায় দোষী সাব্যস্ত ছেলে হান্টারকে ক্ষমা করে দিয়ে গেলেন। যার ফলে ছেলে এই দুই মামলায় কারাদণ্ডের হাত থেকে বেঁচে গেলেন।

যদিও বাইডেন একটি বিবৃতিতে বলেন,’আজ আমি ছেলে হান্টারের ক্ষমাপত্রে সই করলাম।’ ক্ষমা ঘোষণার পর বাইডেন বলেছেন, ‘এটা একটা কাঁচা রাজনীতির ফলশ্রুতি। এভাবে বিচার প্রক্রিয়াকে দিকভ্রান্ত করে দেওয়া হচ্ছে।’

কিন্তু একজন প্রশাসনিক প্রধান হয়ে ছেলেকে অপরাধ মামলায় কেন ক্ষমা করলেন জো বাইডেন? এবিষয়ে বাইডেন ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে বলে আসছি যে, বিচার বিভাগের কাজে হস্তক্ষেপ করব না। দীর্ঘদিন ধরে দেখেছি যে, আমার ছেলেকেই বেছে বেছে অন্যায়ভাবে বিচার করা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও আমি বিরত থেকেছি।’

তিনি বলেন,’যাঁরা বিশেষ কারণে কর সময়মতো দিতে পারেননি, অথচ পরে জরিমানা সহ সুদ মিটিয়ে দিয়েছেন, তাঁদেরকে সাধারণত অপরাধমূলক শাস্তি আরোপ করা হয় না। কিন্তু হান্টারের বেলায় সেটা হয়নি। এটা থেকেই স্পষ্ট যে, তাঁর বিচার অন্যায়ভাবে করা হয়েছে। যে কেউ হান্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি বিশ্লেষণ করলে বুঝতে পারবেন যে, আমার ছেলে হওয়ার কারণেই তাঁকে টার্গেট করা হয়েছে। আমি বিচার ব্যবস্থার প্রতি ভরসা রাখি। কিন্তু রাজনীতি এব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছে। এই কারণে আমি আমার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি। আশা করি, আমেরিকানরা বুঝতে পারবেন কেন একজন বাবা হিসেবে প্রেসিডেন্ট এই সিদ্ধান্ত নিলেন।’