কিম ভাল আছেন। আমি তাঁর সুস্বাস্থ্য কামনা করি। সোমবার উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উন সম্পর্কে এমনই মন্তব্য করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প । এর আগে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে বলা হয়, কিম জীবিত আছেন। ট্রাম্পও এদিন কার্যত সেকথাই স্বীকার করে নেন।
তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি কি কিমের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে জানেন? তিনি বলেন, নিশ্চয় জানি। খুব ভাল করেই জানি। কিন্তু এখন তা আপনাদের বলতে পারব না। পরে ট্রাম্প বলেন, মিডিয়া খুব শীঘ্রই কিম সম্পর্কে জানতে পারবে।
গত ১৫ এপ্রিল উত্তর কোরিয়ায় কিমের পিতামহ কিম ইল সুং-এর জন্মদিবস পালিত হয়। সেই উৎসবে কিম উপস্থিত ছিলেন না। উত্তর কোরিয়ার রাজনৈতিক ক্যালেন্ডারে এটি বিশেষ দিন। তখন থেকেই শুরু হয় জল্পনা।
তা হলে কি কিম অসুস্থ? একটি সুত্রে জানা যায়, ৩৬ বছর বয়সী কিম অত্যধিক ধুমপান করতেন। খুব মোটা হয়ে গিয়েছিলেন। অতিরিক্ত পরিশ্রম করতেন। সেজন্য তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছে। তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে। তারপরেও কিমের বিপদ কাটেনি।
উত্তর কোরিয়ার সংবাদ মাধ্যম কিমের অসুস্থতার কথা ঘোষণা করেনি। একনায়কের চিকিৎসার জন্য চিন থেকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পাঠিয়েছে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। দক্ষিণ কোরিয়ার একটি নিউজ পোর্টালে অবশ্য বলা হয়েছে, কিমের কিছু হয়নি। কোভিড ১৯ থেকে বাঁচার জন্য তিনি শহর ছেড়ে দুরে চলে গিয়েছেন। কিমের ব্যক্তিগত বিমানটি পিয়ংইয়ং-এ দাঁড়িয়ে আছে।
অনেকে ভাবছেন, কিম যদি জীবিতও থাকেন, তিনি আর দেশ চালাতে পারলে না। কারণ হৃদরোগের জন্য তাঁর পক্ষে বেশি পরিশ্রম করা সম্ভব হবে। সেক্ষেত্রে তাঁর পরিবারের কেউ নতুন প্রেসিডেন্ট হবেন। এক্ষেত্রে যাঁর নাম সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে, তিনি কিম জং উনের বোন কিম ইয়ো জং।
কিমের বোনের বয়স তিরিশের কোঠার শুরুর দিকে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে যখন কিম বৈঠক করেন, তখন বোন ছিলেন তাঁর পাশে। চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে কিমের বৈঠকের সময়েও তাঁকে দেখা গিয়েছিল। একসময় উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধি হিসাবে সিওলে গিয়েছিলেন কিম ইয়ো জং। সেদেশের প্রেসিডেন্ট মুন জাই ইনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তাঁদের দেশে।
ইতিমধ্যে কিমের বোন বেশ কয়েকবার সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছে। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার সমাজ কঠোরভাবে পুরুষশাসিত। সেখানে কোনও মহিলাকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে মেনে নেওয়া হবে কিনা সন্দেহ আছে। কোরিয়া ইউনিভার্সিটিতে নর্থ কোরিয়া স্টাডি বিভাগের অধ্যাপক ইয়ো হে ইয়েল বলেন, ইয়ো জং হয়তো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও পদে থাকবেন। কিন্তু তাঁর বেশি ক্ষমতা থাকবে না। উত্তর কোরিয়ার জনগণ কোনও মহিলাকে প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদে মেনে নেবেনা।