গণতন্ত্রের উপর নয়, মূলত শরিয়ত আইনে দেশ চালাবে তালিবান। এই কথা পরিস্কার করে দিয়েছেন আফগানিস্তানের তালিবান সুপ্রিমাে হাউবাতােল্লা আখুজাদা। ইসলামিক আমিরশাহী দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে আফগানিস্তান।
গত মঙ্গলবার দীর্ঘ জল্পনার শেষে সরকার গঠন করে থাকে তালিবান, জেহাদি গােষ্ঠীটির মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সিরাজউদ্দিন হক্কানির মতাে রাষ্ট্রসংঘের তালিকাভুক্ত জঙ্গিদল। ফলে এই দেশটি যে আবারও সন্ত্রাসের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠবে সেই আশঙ্কাই সত্যি প্রমাণিত হতে চলেছে।
তবে এই পরিস্থিতিতে কাবুল দখলের পর প্রথমবারের জন্য মুখ খুলেছে তালিবদের শীর্ষনেতা হায়বাতােল্লা আখুজাদা। তার বক্তব্য,শরিয়তের আওতায় আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তিগুলি মেনে চলবে তালিবান। আন্তর্জাতিক আইন বা চুক্তি কোনওটাই যে মানবে না জেহাদির তা স্পষ্ট হতে চলেছে।
এবার নিজের বিবৃতিতে আখুজাদা বলেছেন, “ভবিষ্যতে প্রশাসনের সমস্ত কাজ এবং জনজীবন নিয়ন্ত্রিত হবে শরিয়ত আইন মেনেই”। ওয়াকিবহাল মতে, দোহায় সব পক্ষকে নিয়ে সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি দিলেও সেই কথা যে রাখবেনা তালিবান তা জানায় ছিল।
আর প্রত্যাশামতােই দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই, আবদুল্লা আবদুল্লা বা গুলবুর্দিন হেকমতিয়ার তালিব মন্ত্রিসভায় জায়গা পাননি। আর মহিলা আমজনতার মানবাধিকার রক্ষা করা হবে বলে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তালিবান তাও রক্ষা করবে না জেহাদিরা।
উল্লেখ্য, আফগানিস্তানে তালিবানের শাসনকে মান্যতা দেওয়া নিয়ে বিভক্ত বিশ্ব। পাকিস্তান, রাশিয়া, চিন ও ইরানের মতাে দেশ গুলির স্বীকৃতি শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া। কারণ আমেরিকাকে কোণঠাসা করতে তালিবানের সঙ্গে বিগত সাত বছর ধরে আলােচনা চালাচ্ছে মস্কো ও বেজিং। সেই চেষ্টা এবার ফলপ্রসূ হয়েছে।
একইভাবে আফগানভূমে ভারতের প্রভাব খর্ব করতে তালিবানই ইসলামাবাদের প্রধান অস্ত্র। বাকি রইল ইউরােপের দেশগুলি ও আমেরিকা। তা এই মুহূর্তে তাদের স্বীকৃতি না পেলেও খুব একটা প্রভাব পড়বে না তালিবদের উপর।
এদিকে, আফগানিস্তান নিয়ে আলােচনা করতে দিল্লিতে বৈঠকে বসেছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্র উপদেষ্টা অজিত ডােভাল ও রাশিয়ার ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজর নিকোলাই পেত্রোশেভ। এখন দেখার কুড়ি বছর আগেকার তালিবান একই রয়ে যায় কিনা।