শরিয়তি আইনের নামে তাণ্ডব চালাচ্ছে তালিবানরা

প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি (File Photo: iStock)

এবার একটি অ্যামিউজমেন্ট পার্ক জ্বালিয়ে দিতে দেখা গেল তালিবানদের। বর্তমান একটি বিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে তালিবান সদস্যরা উত্তরের শেরবারখান প্রদেশের বােখদি অ্যামিউজমেন্ট পার্ক জ্বালিয়ে দিচ্ছে।

স্থানীয় এক সমাজকর্মী এহতেশাখ আফগান জানিয়েছেন, আগুন লাগানাের কারণ ইসলামে নাকি প্রকাশ্যে স্থানে মূর্তি। প্রতিমা বসানাে নিষিদ্ধা আর রবিবার কাবুল দখল করার পর তালিবানেরা ঘােষণা করেন এবার থেকে দেশটা চলবে শরিয়তি আইনে।

যদিও তালিবানরা মুখে বলছে তাদের বিরুদ্ধে যারা অতীতে লড়েছিল, তাদের তারা ক্ষমতা করে দিচ্ছে। দেশে তালিবানরা স্বাভাৰ্কি পরিস্থিতি, আইন কানুন ফেরাচ্ছে। যদিও যারা বিগত নয়ের দশকের তালিবানি শাসকের সঙ্গে পরিচিত তারা কিছুতেই তালিবানের এই সমস্ত কথাতে বিশ্বাস করতে পারছেন না।


কারণ নয়ের দশকের তালিবানি শাসনে গানবাজনা, সিনেমা, মহিলাদের ঘরের বাইরে বেরােনাে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল। তখন প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হত। এবার একটা গােটা পার্ক জ্বালিয়ে দিয়ে সেই জমানার একটা ঝলক ফেরাল তালিবানরা বলে মনে করা হচ্ছে।

যদিও তালিবানরা আইসক্রিম খেয়ে কিংবা বিনােদন পার্কে ঘুরে বেড়িয়ে নিজেদের দুদশক পুরােনাে ইমেজ ভাঙার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তার পরেও নিজেদের ধ্বংসাত্মক সত্ত্বা ঢেকে রাখতে পারছে না তারা বলে মনে করছে অনেকেই। আফগানিস্তানের গজনি প্রদেশে হাজারা সম্প্রদায়ের ন’জনকে নৃশংসভাবে খুন করেছে তালিবান।

জুলাইয়ে ঘটে যাওয়া সেই ঘটনার উল্লেখ করে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, ৩-৪ জুলাইয়ে গজনি প্রদেশের মালিস্তান জেলার মুন্দর গ্রামে হামলা চালায় তালিবান জঙ্গিরা বাড়িঘর লুঠ করে।

গ্রামবাসীদের উপর অকথ্য অত্যাচার চালায়। শুধু তাই নয়, ঠান্ডা মাথায় শ্বাসরুদ্ধ করে, পেশি ছিড়ে ন’জনকে খুন করে জঙ্গিরা। অ্যামনেস্টি জানিয়েছে , নিহতদের মধ্যে ছ’জন পুরুষ তিন জন মহিলা ছিলেন।

গজনিতে দীর্ঘ দিন ধরেই তালিবানের সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছিল আফগান সেনা। গত ৩ জুলাই সেই সংঘর্ষ চরমে পৌঁছয়। নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য মুন্দর গ্রামের ৩০ টি পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে পাহাড়ের নীচে আশ্রয় নেয় কয়েক দিন সেখানে থাকার পরই তাঁদের খাবারে টান পড়ে।

সেই খাবার সংগ্রহ করতেই বাড়িতে গিয়েছিলেন কয়েক জন পুরুষ এবং মহিলা। তখনই দেখতে পান তাঁদের ঘরবাড়ি লুঠ করে পুড়িয়ে দিচ্ছে তালিবান জঙ্গিরা। সেই সময়ই ওই গ্রাম দিয়েই হাজারা সম্প্রদায়ের কয়েক জন যাচ্ছিলেন।

তখনই তাঁদের উপর হামলা চালায় জঙ্গিরা। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আফগান সরকারের এক কর্মীকে তাঁরই গলার স্কার্ফ দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে, পেশি ছিড়ে খুন করে দেহ ছুড়ে ফেলে দেয় জঙ্গিরা।