আগেও অনেকবার করোনা সংক্রমণের প্রকৃত অবস্থা চিন গোপন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফের একবার সেই অভিযোগ করলেন তিনি। বললেন, চিন যা বলছে, তার থেকে আক্রান্তের সংখ্যা ওখানে অনেক বেশি। চিন মিথ্যে কথা বলছে বলেই অভিযোগ ট্রাম্পের।
ট্রাম্প টুইট করে এই অভিযোগ করেন। টুইটে তিনি লেখেন, চিন ঘোষণা করল অদৃশ্য শত্রুর হাতে সেখানে মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ। ওদের আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি। এমনকি আমেরিকার থেকেও অনেক বেশি। যদিও চিনের তরফে উহানে মৃত্যুর সংখ্যা সংখ্যা দ্বিগুণ বলা হয়নি। বলা হয়েছে, উহানে মৃত্যুর সংখ্যা শতাংশ বেশি।
শুক্রবার উহান প্রশাসন জানিয়েছে, এর আগে বলা হয়েছিল ২৫৭৯ জন করোনা আক্রান্ত মারা গেছেন উহানে। কিন্তু এখন উহান শহরে আরও ১২৯০ জনের মৃত্যু দেখানো হয়েছে। ফলে এই নিয়ে করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল উহান শহরে ৩৮৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে মোট পুরো চিনেও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪৬৩২ জন।
করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে ইতিমধ্যেই ট্রাম্পের তোপের মুখে পড়েছে চিন। তিনি সরাসরি দাবি করেছেন, মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে মিথ্যা বলছে চিন। সংখ্যাটা কম করে ৪২ হাজার বলেও দাবি করা হয়েছে আমেরিকার তরফে।
শুধু মৃতের সংখ্যা নিয়ে নয়, চিন প্রথম থেকেই করোনা সংক্রমণ নিয়ে তথ্য গোপন করেছে বলেও অভিযোগ তুলেছে আমেরিকা। এমনকি এও দাবি করা হয়েছে, উহানের গবেষণাগারে জৈবরাসায়নিক অস্ত্র হিসেবে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি।
কয়েক দিন আগে ওয়াশিংটন পোস্টের একটি প্রতিবেদনে লেখা হয়, গত দু’সপ্তাহ ধরে লম্বা লাইন পড়েছে উহানের সরকারি দফতরে। সকলেই প্রিয়জনদের দাহ করার পরে ছাই সংগ্রহ করতে এসেছেন।
কেউ কেউ ছ’ঘণ্টা পর্যন্তও দাঁড়িয়ে থাকছে। শুধু তাই নয় এখনও পর্যন্ত দফায় দফায় কবর দেওয়া হচ্ছে অসংখ্য লাশ। ১৯-২০ ঘণ্টা করে কাজ চলছে একটানা। কেইক্সিন ম্যাগাজিনের রিপোর্ট বলছে, শেষ দু’দিনে অন্তত পাঁচ হাজার কফিন এসেছে সেখানে। ওয়াশিংটন পোস্ট প্রশ্ন তুলেছে, চিনের দেওয়া মৃত্যুর পরিসংখ্যান তাহলে কতটা সত্য?
চিনের নিজস্ব সোশ্যাল সাইটে যা তথ্য পাওয়া গেছে তাতে জানা যাচ্ছে, গত দেড় সপ্তাহ ধরে উহানের ফিউনেরাল হোমগুলি থেকে তিন-সাড়ে তিন হাজার দেহ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রতিদিন। ওয়াশিংটন পোস্টের দাবি, সমস্তটা যাচাই করে ধারণা করা যায়, উহানের মৃতের সংখ্যা কম করে ৪২ হাজার। সরকার যা বলেছে, তর ১৬ গুণ বেশি।
উহানের সাধারণ মানুষও বলছে, সরকারি তথ্যে বড় গাফিলতি রয়েছে। কারণ কবরস্থানগুলি উপচে পড়েছিল। মাত্র আড়াই হাজার মৃত্যুতে এমনটা হওয়ার কথা নয় মোটেই। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টও একই কথা বলছে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। চিনা সংবাদ সংস্থা শিনহুয়াতেও প্রকাশ করা হয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তথ্য পর্যালোচনায় মৃতের তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরও ১২৯৩ জনের নাম।
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নোভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর গত সাড়ে তিন মাসে বিশ্বের ১৮৫’টি দেশে ২১ লাখ ৫৮ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার মানুষের।