• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

পাকিস্তানে মন্দির ভেঙে তাণ্ডব, হিন্দু পরিবারগুলিকে বাঁচালেন সিন্ধু প্রদেশের স্থানীয় মুসলিমরা

শতাব্দী প্রাচীন এক পাড়ায় শীতল দাস কম্পাউন্ড। যেখানে ৩০০ ঘর হিন্দু পরিবারের সঙ্গে মাত্র ৩০ ঘর মুসলিম পরিবারের বাস।

প্রতিকি ছবি (Photo: Statesman News Service)

হানাদারদের মতােই রে রে করে তেড়ে এসেছিল তারা। ঠিক যেন একপাল পঙ্গপাল। কাতারে কাতারে কয়েকশাে লােক গাইতি, শাবল ইত্যাদি নিয়ে চোখের নিমেষে একটি মন্দিরকে ধূলিস্যাৎ করে দেয়। ওদের নিশানায় ছিল স্থানীয় হিন্দু পরিবারগুলি। দুরমুশ করতে চেয়েছিল তাদের। হয়তাে রক্তগঙ্গা বইয়ে চলে যেত। কিন্তু পারেনি আরও কয়েকজনের জন্য। পাড়ায় বহিরাগত হানাদারদের রুখতে এই মানুষগুলাে হাতে অস্ত্র তুলে নেয়। সঙ্ঘবদ্ধ প্রতিরােধের সামনে পড়ে পিছু হঠতে বাধ্য হয় ধর্মীয় উন্মত্ত হানাদাররা।

এলাকার কয়েকশ হিন্দু পরিবারদের সুরক্ষায় যাঁরা মুহূর্তে ত্রাতার ভূমিকা নেন, তারাও কিন্তু একেকজন মুসলিম। কিন্তু তাদের মনে ধর্মের নামে ভণ্ডামি ছিল না। ধর্মকে অস্ত্র করে সন্ত্রাসের আবহ রচনা না করে বছরের পর বছর সম্প্রীতি রক্ষা করে চলেছেন তারা। সেই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে চোনা ফেলতে এসেছিল ধর্মের ধ্বজাধারী উন্মাদরা। ঘটনাস্থল পাকিস্তান। প্রদেশের নাম সিন্ধু। 

এই সিন্ধু প্রদেশের হিন্দুরা যে খুব সুখে নেই, মাঝেমধ্যে এসে পড়া খবরে তা কারো অজানা নয়। বিয়ের অছিলায় হিন্দু মেয়েদের ধর্মান্তরিতকরণ তাে আকছাড় ঘটে এই প্রদেশে। এমনই একটি প্রদেশে অনন্য নজির। সৃষ্টি করলাে কয়েকটি মুসলিম পরিবার। 

শতাব্দী প্রাচীন এক পাড়ায় শীতল দাস কম্পাউন্ড। যেখানে ৩০০ ঘর হিন্দু পরিবারের সঙ্গে মাত্র ৩০ ঘর মুসলিম পরিবারের বাস। গত রবিবার অনন্য নজির তৈরি করে ৩০ ঘর সাহসী মুসলিম পরিবার বাঁচালাে তিনশােটি হিন্দু পরিবারকে।

সেখানকার প্রতিবেশীদের উদ্ধৃতি দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কয়েক’শ লােক রবিবার জড়ো হয়েছিল ওই কম্পাউন্ডের বাইরে। হিন্দুদের ওপর হামলা চালানােই ছিল উদ্দেশ্য। বহিরাগতদের উপস্থিতি দেখে শুধু ওই কম্পাউন্ডই নয়, আশেপাশে যত মুসলিম প্রতিবেশী ছিলেন, পিলপিল করে বেরিয়ে পড়েন। তারাই রুখে দেন হামলাকারীদের। ততক্ষণে পুলিশের কাছেও খবর চলে গেছে। পুলিশ আসতে দেখেই পালিয়ে যায় ওই হানাদাররা। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শীকে উদ্ধৃত করে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানাচ্ছে, পুলিশ আসার আগেই ওই উন্মত্ত লােকেরা সেখানকার একটি হিন্দু মন্দির গুড়িয়ে দিয়েছে। পুলিশ স্বীকার করে, স্থানীয় মুসলিমরা রুখে না দাঁড়ালে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যেতে পারত।