কাবুল বিস্ফোরণে নিহত তালিবান মন্ত্রী হাক্কানি, পিছনে কার হাত? গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নাকি আইএস?

নিহত তালিবান সরকারের মন্ত্রী খলিলুর রহমান হাক্কানি।

ফের ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল আফগানিস্তান। বুধবার রাজধানী কাবুলের মন্ত্রণালয়ে এই বিস্ফোরণের জেরে তালিবান সরকারের এক মন্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত ওই মন্ত্রীর নাম খলিলুর রহমান হাক্কানি। তিনি তালিবান সরকারের শরণার্থী বিষয়ক মন্ত্রী। হাক্কানির সঙ্গে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে খলিল হাক্কানির দুই ঘনিষ্ঠ সঙ্গীও রয়েছেন। বুধবার বিস্ফোরণের পর তাঁর ভাইপো আনাস হাক্কানি মন্ত্রী খলিল হাক্কানির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। আনাস হাক্কানি দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা এক সাহসী মুজাহিদকে হারালাম। আমরা কখনও তাঁর আত্মত্যাগ ভুলব না।’

উল্লেখ্য, মুজাহিদ শব্দের অর্থ ‘পবিত্র যোদ্ধা’। সেজন্য বীরত্বমূলক অথবা জেহাদি কাজে যুক্ত কেউ মারা গেলে তালিবানরা এই শব্দের ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু কে বা কারা এই বোমা বিস্ফোরণ ঘটাল? এর পিছনে কি নিছক গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব? নাকি ইসলামিক স্টেট (আইএস)- এর হাত রয়েছে? বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে জল্পনার পারদ চড়ছে।

সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, নিহত খলিল হাক্কানি আফগানিস্তানের কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন ‘হাক্কানি নেটওয়ার্কে’র অন্যতম চক্রী। আবার এই জেহাদি সংগঠনের নেতার কাকা সিরাজউদ্দিন হাক্কানি এই সংগঠনটির প্রধান। এই সংগঠনের ওপর পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। অন্যদিকে হাক্কানি নেটওয়ার্ক জম্মু ও কাশ্মীরে জইশ-ই-মহম্মদের মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে মদত জোগায়।


উল্লেখ্য, ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এরপর দেশের মৌলবাদী শক্তি তালিবানরা ক্ষমতা দখল করে সরকার গঠন করে। মানুষের স্বাধীনতা খর্ব করে জারি হয় একাধিক ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা। মেয়েদের ওপর কঠোর রক্ষণশীল নীতি আরোপ করে জেহাদিদের প্রতিষ্ঠিত সরকার। তাঁদের শিক্ষা ও কর্মজীবনে জোর করে একাধিক নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়। মেয়েরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করলে তাঁদের ওপর আক্রমণ করা হয়। যার জেরে স্বাভাবিক জনজীবন বারবার ব্যাহত হয়েছে। মানুষের জীবন ক্রমশ দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। কিছুদিন অন্তর বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের সামনে প্রায়ই ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে চলেছে। দেশে একের পর এক জঙ্গি হামলায় ক্রমাগত মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। আবার আইএস-এর সঙ্গে তালিবানদের ক্ষমতার লড়াই শুরু হয়েছে। ফলে এই বিস্ফোরণের পিছনে আইএস-এর হাত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।