তাইওয়ানের দক্ষিণ উপকূলে যুদ্ধের আদলে সামরিক মহড়া শুরু করেছে চিন। চিনের পিপল্স লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) এই মহড়া চালাচ্ছে। এর পাল্টা পদক্ষেপ করল তাইওয়ান। নিজেদের জলসীমায় নৌ, বিমান ও সেনাবাহিনী পাঠিয়েছে তাইওয়ান। একই সঙ্গে চিনের মহড়াকে ‘বিপজ্জনক’ আখ্যা দিয়েছে তারা। তাইওয়ানের দক্ষিণ উপকূলের ৪০ নটিক্যাল মাইল দূরে যুদ্ধজাহাজ-সহ ৪৫টি যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে চিন।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চিনের সেনাবাহিনী আমাদের না জানিয়ে কাওশিউং ও পিংতুং উপকূলের ৪০ নটিক্যাল মাইল দূরে একতরফাভাবে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে। আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করেছে চিন। শুধু তাই নয়, বেজিংয়ের এই একতরফা পদক্ষেপে বাণিজ্যিক উড়ান ও জাহাজ চলাচলে সমস্যা দেখা দিয়েছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ওই এলাকার আশপাশে নৌ, বিমান ও সেনাবাহিনী পাঠানো হয়েছে। কাওশিউং ও পিংতুং প্রশাসনিক উপকূলে তাইওয়ানের নৌ ও বিমানবাহিনীর ঘাঁটি রয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে ফেব্রুয়ারির গোড়ায় আমেরিকার সপ্তম নৌবহরের অন্তর্ভুক্ত দু’টি যুদ্ধজাহাজ তাইওয়ান প্রণালীতে ঢুকেছিল। তারপর থেকে উত্তেজনা রয়েছে ওই এলাকায়। অবশ্য কয়েক বছর ধরেই তাইওয়ানের চারপাশে মহড়া এবং যুদ্ধবিমান ও যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন বাড়িয়েছে চিন। তাইওয়ানের ওপর চাপ তৈরি করতেই এই পথে হাঁটছে চিন। তাইওয়ান বারবার দাবি করেছে, চিন বলে এক, আর করে আরেক। চিনের পদক্ষেপ তাদের বারবার বলে আসা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নীতির সম্পূর্ণ বিরোধী।
তাইওয়ানের বিবৃতি নিয়ে মন্তব্য করতে নারাজ চিনের বিদেশ মন্ত্রক। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লিন জিয়ান সাংবাদিকদের বলেছেন, এটা বিদেশ মন্ত্রকের বিষয় নয়। একই বিষয়ে জানতে চিনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল সংবাদ সংস্থা। কিন্তু তারা তাৎক্ষণিক কোনও মন্তব্য করেনি। ফলে চিনের এি সামরিক মহড়া কত দিন চলবে, তা জানা যায়নি।
তাইওয়ান চিনের মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ। ১৯৪৯ সালে চিন এবং তাইওয়ান আলাদা হয়ে যায়। সেই বছর মাও সেতুং-এর নেতৃত্বে কমিউনিস্টরা জয় পায় এবং চিনের গৃহযুদ্ধ শেষ হয়। পরবর্তী সময়ে চিন দাবি করে, তাইওয়ান চিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। অন্যদিকে তাইওয়ান জানিয়ে দেয়, তারা স্বাধীন দেশ। দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে এই বিবাদ চলছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম দফার মেয়াদের সময় থেকে তাইওয়ান-আমেরিকা সম্পর্ক জোরদার হয়।