শেখ হাসিনা ও তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে পাচারের অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন এই কেলেঙ্কারির তদন্ত শুরু করেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক আখতারুল ইসলাম এই তথ্য জানিয়েছেন।আখতারুল ইসলাম বলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে বিদেশে টাকা পাচারের বিষয়টি অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার ৯টি প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকা অনিয়ম–দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ ও টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প, বেপজা-সহ ৯টি প্রকল্পে এসব অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। এসব অর্থ আত্মসাৎ ও দেশের বাইরে পাচারের অভিযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকেই একাধিক অভিযোগ দায়ের হয়েছে শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ ছেড়ে আপাতত দিল্লিতে রয়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু তাতেও স্বস্তি নেই তাঁর। সম্প্রতি, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। ২০১০ সালে খোদ হাসিনাই অপরাধ দমনে এই প্রতিষ্ঠানটি তৈরি করেছিলেন।
আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই সম্প্রতি শেখ হাসিনা ও তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিষয়ে একটি তদন্ত করে। ২০১৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বনাম রিজভী আহমেদ মামলায় প্রথম জয়ে নাম জড়ায়। এফবিআইয়ের তদন্তেই উঠে এসেছে, আর্থিক কেলেঙ্কারি সঙ্গে যুক্ত জয়। হংকং এবং কেম্যান আইল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে স্থানীয় একটি মানি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে ওয়াশিংটন ডিসি, নিউ ইয়র্ক এবং লন্ডনের বিভিন্ন ব্যাঙ্কে টাকা পাচারের অভিযোগ উঠেছে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে।
এফবিআইয়ের লন্ডনের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সজীব ওয়াজেদ জয় আর্থিক অনিয়ম ও তছরুপের সঙ্গে যুক্ত। ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের (ডিওজে) সিনিয়র ট্রায়াল অ্যাটর্নি লিন্ডা সেমুয়েলস স্পেশাল এজেন্ট লা প্রিভোটের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাংলাদেশ থেকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যাঙ্কে জমা করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা পরিবারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে ৫ সদস্যের টিম গঠন করা হয়েছে। বিদেশে অর্থ পাচারের তদন্তও করবে ওই দল। দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের নেতৃত্ব ৫ সদস্যের টিম গঠন করা হয়েছে। টিমের অন্য সদস্যরা হলেন, উপ-পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া, সহকারী পরিচালক এসএম রাশেদুল হাসান ও সহকারী পরিচালক একেএম মর্তুজা আলী সাগর।