• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

হোলি আর্টিসান রেঁস্তোরায় জঙ্গি হামলার মামলায় সাতজনের ফাঁসির আদেশ

বাংলাদেশের গুরুত্বপুর্ণ কুটনৈতিক এলাকা গুলশানে হোলি আর্টিসান রেঁস্তোরায় জঙ্গি হামলা ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞের মামলায় আজ সাত জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

হোলি আর্টিসান রেঁস্তোরায় জঙ্গি হামলার অভিযুক্তকে নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ। (Photo: bdnews24/IANS)

তিন বছর আগে ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর গুরুত্বপুর্ণ কুটনৈতিক এলাকা গুলশানে হোলি আর্টিসান রেঁস্তোরায় জঙ্গি হামলা ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞের মামলায় আজ সাত জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়। একজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। বিচার শুরু হওয়ার এক বছরের মাথায় আজ বুধবার বহুল আলােচিত এই মামলার রায় ঘােষণা করলাে ঢাকার সন্ত্রাসবিরােধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। হোলি আর্টিসানে হামলার পর আইএস (ইসলামিক স্টেট) ঘটনার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছিল।

ফাঁসির সাজা পাওয়া সাত আসামি হলেন রাকিবুল ইসলাম রিগ্যান ওরফে রাফিউল ইসলাম, রাজীব গান্ধি ওরফে জাহাঙ্গীর আলম, মােহাম্মদ আসলাম হােসেন ওরফে র‍্যাশ, আবদুস সবুর খান ওরফে সােহেল মাহফুজ, মােহাম্মদ হাদিসুর রহমান সাগর ওরফে সাগর, মামুনুর রশিদ রিপন, শরিফুল ইসলাম খালেদ। আর খালাস পেয়েছেন মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান।

২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর অভিযােগ গঠনের মধ্য দিয়ে এই হামলা মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। গত এক বছরে রাষ্ট্রপক্ষ এই হামলা মামলায় ১১৩ জন সাক্ষী হাজির করেছে। তাদের মধ্যে ছিলেন নিহত পুলিশ সদস্যদের স্বজন, হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে আহত পুলিশ, হোলি আর্টিসান রেস্তোরার মালিক ও কর্মী, জিম্মি হয়ে পড়া অতিথি এবং যেসব বাড়িতে আস্তানা গেড়ে নৃশংস এই হামলার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, সেসব বাড়ির মালিকেরা।

২০১৬ সালের ১ জুলাই ঢাকার গুলশানে ভয়াবহ ওই হামলার ঘটনা স্তম্ভিত করেছিল পুরাে বাংলাদেশকে। একই সঙ্গে স্পষ্ট করা হয়েছিল জঙ্গিবাদের বিস্তারের এক বিপজ্জনক মাত্রা। জঙ্গিরা হত্যা করেছিল ২০ জন দেশি বিদেশি নাগরিককে, যাদের মধ্যে ৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি, ১ জন ভারতীয় ও ৩ জন বাংলাদেশি। জঙ্গিদের গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তাও প্রাণ হারান।

পুলিশের তদন্তে এসেছে, এই হামলায় জড়িত গােষ্ঠীর নাম নব্য জেএমবি, যারা ঘটনার পর নিজেদের আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস (ইসলামিক স্টেট) বলে দাবি করেছিল। ওই ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একের পর এক অভিযান চালিয়েছে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায়। গুঁড়িয়ে দিয়েছে জঙ্গিদের অনেক আস্তানা। এসব অভিযানে নিহত হয়েছেন হোলি আর্টিসান বেকারিতে হামলার মূল সমন্বয়ক ও পরিকল্পনাকারী বাংলাদেশি বংশােদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরী। প্রধান পরিকল্পনকারী তামিম চৌধুরী সহ জড়িত গুরুত্বপূর্ণ আট জঙ্গি। অন্য সাতজন হচ্ছে নুরুল ইসলাম মারজান, তানভীর কাদেরী, মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ওরফে মুরাদ, রায়হান কবির তারেক, সারােয়ার জাহান মানিক, বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট ও মিজানুর রহমান ওরফে ছােট মিজান।

হোলি আর্টিসানে হামলাকারী পাঁচ জঙ্গি নিহত হয় ঘটনার পরদিন সকালে সেনা কমান্ডােদের অভিযানে। ঘটনাস্থলে নিহত পাঁচ আসামি হল- রােহান ইবনে ইমতিয়াজ, মীর সামেহ মােবাশ্বের, নিবরাস ইসলাম, শফিকুল ইসলা ওরফে উজ্জ্বল ও খায়াংল ইসলাম ওরফে পায়েল। এ ঘটনায় জড়িত জীবিত থাকা আট জঙ্গি কারাগারে আছে। তাদের বিচারের রায় ঘােষণা হল আজ।