হলদিমির! এই শব্দবন্ধটি গোটা বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পেয়েছে। কারণ সে আর কেউ নয়। সমুদ্রের জলের নিচে গুপ্তচর বৃত্তিই তার পেশা। তবে কার গুপ্তচর? সে নাকি রাশিয়ার এক বিশ্বস্ত গুপ্তচর। গভীর সমুদ্রে ঘুরে ঘুরে গোপন তথ্য তুলে দেওয়ায় তার কাজ। অবশেষে তারই মৃত্যু নিয়ে ঘনিয়েছে রহস্য। মৃত্যুর পিছনে কি হত্যা? নাকি স্বাভাবিক মৃত্যু? তাই নিয়ে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় সংবাদ মাধ্যম।
এখন আপনি নিশ্চয় ভাবছেন ব্যক্তিটি আসলে কে? কিভাবেই বা সে জলের তলায় নিজের জীবন বাজি রেখে এই গুপ্তচর বৃত্তি করে? আসলে সে কোনও ব্যক্তি নয়। বেলুগা প্রজাতির একটি তিমি। ডলফিনের মতো মানুষের সঙ্গে সে মিশতে ভালোবাসে। নরওয়ের ‘হল’ আর ‘ভ্লাদিমির’-এর ‘দিমির’ জুড়ে নামকরণ হয়েছে ‘হলদিমির’। তার রহস্যমৃত্যু নিয়ে তোলপাড় আন্তর্জাতিক রাজনীতি। কারণ তাকে রাশিয়ার গুপ্তচর তিমি বলে সংবাদ মাধ্যমে ব্যাপক চর্চা রয়েছে। সম্প্রতি এই তিমিটির নিথর দেহ উদ্ধার হয়েছে নরওয়ের সমুদ্র উপকূলে।
জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে তিমিটিকে নিয়ে প্রথম শোরগোল শুরু হয়। কারণ তার গলায় সেন্ট পিটার্সবার্গের একটি বেল্ট লক্ষ্য করা যায়। সেটা দেখে অনেকেই দাবি করেছে, এটি রাশিয়ার গুপ্তচর বৃত্তির জন্যই ব্যবহৃত হতো। তবে বিষয়টি নিয়ে সেসময় রাশিয়া সম্পূর্ণ নীরব থেকেছে। একটিও বাক্যও ব্যয় করেনি।
এদিকে তিমিটির মৃত্যু নিয়ে একাধিক দাবি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে। কেউ দাবি করেছে, এটি কোনও স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। আসলে গুপ্তচর বৃত্তির জন্য তাকে হত্যা করেছে রাশিয়ার শত্রু কোনও দেশ। কারণ তার দেহে নাকি একটি গুলির চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। এর আগে প্রাণী সংরক্ষণ সংস্থা এনওওএইচ এবং ওয়ান হোয়েল দাবি করেছিল যে, তিমিটিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এবং তারা পুলিশে অভিযোগও দায়ের করে।
তবে সেই দাবি নস্যাৎ করেছে নরওয়ে প্রশাসন। সেদেশের পুলিশ জানিয়েছে, গুপ্ত ঘাতকের কোনও গুলি নয়, ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ‘হলদিমির’-এর। তার মুখে একটি কাঠের টুকরো বিঁধে ছিল। তা থেকেই সংক্রমণ হয় বলে দাবি করা হয়েছে। কোনও গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এমনটাই জানিয়েছে নরওয়ে প্রশাসন। নরওয়ের মৎস্য দপ্তরের পক্ষ থেকে স্যান্ডনেসের পশু চিকিৎসা সংস্থা একটি ময়নাতদন্ত করে। সেখানে তিমিটির মুখে ৩৫ সেন্টিমিটারের একটি কাঠের টুকরো পাওয়া যায় বলে ময়না তদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।