ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ‘ওরেশনিক’ নামে আন্তর্মহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করল রাশিয়া

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আক্রমণ আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠল। যুদ্ধে প্রথমবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ‘ওরেশনিক’ নামের দূরপাল্লার আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করল রাশিয়া। এই ক্ষেপণাস্ত্রকে ঘিরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পশ্চিম ইওরোপের দেশগুলোতেও। রাশিয়া বৃহস্পতিবার এই হামলা চালায়। ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, এটি তাঁর নতুন ‘ওরেশনিক’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা ছিল। ইউক্রেনের নিরাপত্তা পরিষেবা সংস্থা এসবিইউ  কিছু জায়গা থেকে ছোট এবং বড় ধাতব টুকরোগুলি দেখতে পান। এসবিইউ ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্রটির নাম উল্লেখ না করলেও তারা জানিয়েছে যে , এমন ধাতব জিনিস আগে কখনও চোখে পড়েনি। তদন্তকারী আধিকারিক ওলেগ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইউক্রেনের ভূখণ্ডে এই প্রথম এই  ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই জিনিস নিরাপত্তা বিষয়ক তদন্তকারীরা আগে নথিভুক্ত করেননি।’ ওলেগ আরও জানান,  তদন্তকারীরা টুকরোগুলি পরীক্ষা করছেন এবং পরে ক্ষেপণাস্ত্রের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানাবেন।
 
ইউক্রেনের উপর আঘাত হানতে এবার অন্যতম শক্তিশালী অস্ত্র প্রয়োগ করলেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। একসঙ্গে ৬টি নিশানায় হামলা চালাতে পারে এই মারণাস্ত্র। ২১নভেম্বর ইউক্রেনের শহর ডিনিপ্রোতে হামলা চালায় পুতিনের ফৌজ। এই অস্ত্রের নাম ওরেনশিক। প্রথমবার কোন যুদ্ধে মস্কো এমন ক্ষমতা দেখাল বলে জানা গিয়েছে। এই হামলার কিছুক্ষণের মধ্যেই টেলিভিশনে ভাষণ দেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।  সেখানে তিনি বলেন , ‘ নতুন ধরণের প্রথাগত মাঝারি পাল্লার ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে।  শব্দের ১০ গুণ গতিতে উড়ে গিয়ে সেটি লক্ষ্যে আঘাত হেনেছে।’
 
ইউক্রেনের ফৌজি গুপ্তর বিভাগ ‘ওরেনশিক’কে নতুন ধরণের আইসিবিএম বলে উল্লেখ করেছে।  তাদের দাবি, রাশিয়ার আস্ত্রাখান এলাকা থেকে এটিকে ছোড়া  হয়েছে , ডিনিপ্রো থেকে যার দূরত্ব প্রায় হাজার কিলোমিটার। লক্ষ্যে আঘাত হানতে মাত্র ১৫ মিনিট সময় নিয়েছে ওরেনশিক। 
 
কিভের সেনা জানিয়েছে, শব্দের চেয়ে ১১ গুণ গতিতে উড়ে এসে হামলা চালায় ওই ক্ষেপণাস্ত্র। মোট ৬টি ওয়ারহেডে সজ্জিত ছিল ওরেনশিক। সেগুলির প্রতিটি থেকে আছড়ে পরে ৬টি করে বিস্ফোরক ভর্তি হাতিয়ার। ইউক্রেনের ডিনিপ্রোকে ধূলিসাৎ করার ভিডিও প্রকাশ করেছে।     

পুতিন বলেন, ক্ষেপণাস্ত্রটি শব্দের ১০  গুণ গতিতে ওড়ে এবং বিমান প্রতিরক্ষা দিয়ে একে  বাধা দেওয়া যায় না।
অন্যদিকে ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি জেলেনস্কি এই হামলাকে ‘রাশিয়ার উন্মাদনার সর্বশেষ লড়াই’ বলে অভিহিত করেছেন। পাশাপাশি তিনি এই নতুন হামলার  মোকাবিলায় অত্যাধুনিক বিমান-প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য আবেদন করেছেন।