আমেরিকায় ক্ষমতায় আসার আগে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি নিয়ে বড় ঘোষণা করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, দু’টি ফোন করলেই যুদ্ধ বন্ধ হয়ে যাবে। মাত্র ২৪ ঘণ্টায় যুদ্ধ বন্ধ করে দেবেন তিনি। যদিও পরবর্তীতে ট্রাম্প স্বীকার করে নেন, প্রচারের সময় ওই বিষয়ে তিনি ঠাট্টা করেছিলেন। তবে জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে শান্তিচুক্তিতে রাজি হওয়ার বিষয়ে মস্কো ও কিভকে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছেন ট্রাম্প। যদিও রাশিয়ার তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও সদর্থক বার্তা পাননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। গত মাসে এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘রুশ প্রেসিডেন্টের আচরণ নিয়ে আমি বিরক্ত।’ এহেন পরিস্থিতিতে ইউক্রেন-রাশিয়া শান্তিচুক্তির বিষয়ে একটি অভূতপূর্ব প্রস্তাব রেখেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের এক কর্তা। ইউক্রেনকে বেশ কয়েকটি ছোট ছোট প্রদেশে ভাগ করে রাশিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে আমেরিকা।
সূত্রের খবর, গোটা ভাবনার নেপথ্যে রয়েছেন আমেরিকার বিশেষ কূটনীতিক স্টিভ উইটকফ। রাশিয়াকে চারটি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আরও কয়েকটি ইউক্রেনীয় অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণভার দেওয়ার প্রস্তাব রেখেছেন তিনি। তবে, এই ‘চুক্তি’ নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে কৌশলগত পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। গত সপ্তাহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দূতের সঙ্গে একটি নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন ট্রাম্প প্রশাসনের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। সেই নৈশভোজের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই এই তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। উইটকফ বলেন, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির সব চেয়ে সঠিক পথ হল ২০২২ সালে অবৈধ ভাবে দখল করার চেষ্টা করা চারটি পূর্ব ইউক্রেনীয় অঞ্চলের মালিকানা রাশিয়াকে দেওয়া।’ আগেও এই জাতীয় প্রস্তাব দিয়েছেন স্টিভ। যদিও কোনও বারই রাশিয়ার কাছ থেকে সবুজ সংকেত পাননি তিনি।
হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকের সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ইউক্রেন বিষয়ক বিশেষ দূত জেনারেল কিথ কেলিগ এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন বিতর্কিত ভূমি সম্পর্কিত কিছু শর্ত নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত থাকতে পারে, কিন্তু তারা কখনই একতরফাভাবে রাশিয়ার কাছে এই অঞ্চলগুলির সম্পূর্ণ মালিকানা হস্তান্তর করতে রাজি হবে না।’ শনিবার সেন্ট পিটার্সবার্গে প্রেসিডেন্টের গ্রন্থাগারে পুতিন ও উইটকফ বৈঠকে বসেন। তাঁদের বৈঠক প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা চলে বলে খবর। রাশিয়ার তরফে জানানো হয়েছে, ‘ইউক্রেনের বিভিন্ন বসতির (রাশিয়ার অধিকৃত অঞ্চল) নানা দিককে কেন্দ্র করে বিভিন্ন আলোচনা হয়েছে।’ প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পুতিন ও উইটকফ এই নিয়ে তিনবার বৈঠক করলেন। রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় বৈঠকগুলি হয়েছে।