পেয়ংগ্যাং, ১৮ জুন– দীর্ঘ ২৪ বছর পর ‘বন্ধু’ কিম জং উনের দেশে মস্কো প্রধান ভ্লাদিমির পুতিন৷ তাও এমন একটা সময়ে যখন বিশাক্ত যুদ্ধের অবাহাওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন জুড়ে৷ যুদ্ধের মাঝে হঠাৎই উত্তর কোরিয়ায় যাচ্ছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন৷
পুতিনের এই উত্তর কোরিয়া সফরের খবরে আমেরিকার দাবি, এবার দুদেশের মধ্যে অস্ত্র চুক্তি নিয়েই পুতিনের এই সফর৷ গত কয়েকমাসে রুশ ফৌজের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বেশ বেগ হতে হচ্ছে বাহিনীকে৷ বিশ্বের নানান দেশের কাছে হাতিয়ার চেয়ে না পেয়েই শেষে উত্তর কোরিয়ার শরণাপন্ন মস্কো প্রধান৷
জানা গিয়েছে, পুতিনের সঙ্গে এই সফরে থাকবেন রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলোসভ, বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এবং ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার আলেকজান্ডার নোভাক৷ বিশ্লেষকদের মতে, হাতিয়ার ও প্রযুক্তির আদানপ্রদানের মাধ্যমে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্ক আরও মজবুত হতে চলেছে৷ যা এখন মাথাব্যথার কারণ আমেরিকা ও ইউক্রেনের৷
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকার চোখরাঙানি উপেক্ষা করে রাশিয়ায় গিয়েছিলেন কিম৷ বন্ধু পুতিনকে আশ্বাস দিয়েছিলেন, রণক্ষেত্রে রাশিয়াকে সবরকমভাবে নিঃশর্ত সাহায্যের৷ পাশাপাশি রুশ প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন পিয়ংইয়ংয়ে যাওয়ার জন্য৷ সেই ডাকে সাড়া দিয়েই এবার উত্তর কোরিয়ায় যাচ্ছেন পুতিন৷ আজ, মঙ্গলবার পিয়ংইয়ংয়ে পা রাখবেন তিনি৷ বুধবার পর্যন্ত থাকবেন বন্ধুর দেশে৷ রয়টার্স সূত্রে খবর, এই দুদিনে পুতিন বৈঠক করার পাশাপাশি ঘুরে দেখবেন কিমের অত্যাধুনিক অস্ত্রভাণ্ডার৷ ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকেই পরমাণু অস্ত্রধারী এই দেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করতে উঠেপড়ে লেগেছে মস্কো৷ কারণ এই যুদ্ধে হাতিয়ার জুগিয়ে ইউক্রেনের পাশে রয়েছে আমেরিকা৷ যা মোটেই ভালোভাবে নেননি পুতিন৷
মার্কিন বিদেশ দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারও ফের একবার দাবি করেন, “ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার অস্ত্রভাণ্ডারে টান পড়েছে৷ তারা চাইছে ইরান ও উত্তর কোরিয়ার থেকে অস্ত্র নিয়ে সেই ঘাটতি পূরণ করতে৷ আমরা জানি, এর মধ্যে পিয়ংইয়ং থেকে কয়েক ডজন ব্যালিস্টিক মিসাইল ও ১১ হাজার কন্টেনারে গোলাবারুদ রাশিয়ায় গিয়েছে৷ যা মস্কো ব্যবহার করছে কিয়েভের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে৷”
প্রসঙ্গত, ২০০০ সালে শেষবার উত্তর কোরিয়ায় গিয়েছিলেন পুতিন৷ এদিকে, এই সফর সম্পর্কে পুতিনের বিদেশ নীতির উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বিষয়ে সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি বিশেষ চুক্তি স্বাক্ষর হবে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে৷ তবে এই চুক্তি কোনও দেশের বিরুদ্ধে পরিচালিত হবে না বলে উল্লেখ করেছেন তিনি৷