• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা করুন, এবার মােদি সরকারকে বাতা আমেরিকার

পড়শি দেশ পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে আসা মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের ভারতের নাগরিকত্ব দিতে গত সােমবার লােকসভায় সিএবি পাশ করিয়ে নিয়েছে।

বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার। (Photo: IANS/MEA)

এবার ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা নিয়ে সরব হল মার্কিন সরকার। মােদি সরকারের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়েছে তাদের বিদেশ দফতর। তাতে সংবিধান এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবােধ মেনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় মােদি সরকারকে সচেষ্ট হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে তারা। যদিও এই পরামর্শ কার্যত ভারতের উদ্দেশে কড়া বার্তা বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।

বৃহস্পতিবার বিদেশ দফতরের মুখপাত্র বলেন, ‘নাগরিকত্ব সংশােধনী বিল ঘিরে কী কী ঘটছে, সেদিকে নজর রেখেছি আমরা। ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং সকলের সমানাধিকারই আমাদের দুই গণতন্ত্রের মৌলিক নীতি। ভারতের কাছে মার্কিন সরকারের আর্জি, সংবিধান এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবােধের কথা মাথায় রেখে তারা যেন দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা করে’।

পড়শি দেশ পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে আসা মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের ভারতের নাগরিকত্ব দিতে গত সােমবার লােকসভায় নাগরিকত্ব সংশােধনী বিল (সিএবি) পাশ করিয়ে নিয়েছে। বুধবার রাজ্যসভাতেও তা পাশ হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে তাতে সই করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।

শুরু থেকেই এই বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে মার্কিন কংগ্রেসের একটি অংশ। জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) পর দেশের সংখ্যালঘুকে নিশানা করতে উদ্দেশ্যপ্রণােদিতভাবে মােদি সরকার নাগরিক সংশােধনী বিল এনেছে বলে দাবি তাদের। তা নিয়ে সপ্তাহের শুরুতেই নরেন্দ্র মােদি-অমিত শাহ’দের বিরুদ্ধে সরব হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ)। তারা জানায়, নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ধর্মীয় মানদণ্ড বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত বিপজ্জনক। সংসদের দুই কক্ষে বিলটি পাশ হলে অমিত শাহ’সহ দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানাে উচিত বলে মার্কিন বিদেশ দফতরের কাছে সুপারিশও করে তারা।

সেই সময় ইউএসআইআরএফ-এর সুপারিশকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়নি ভারত। বরং তাদের মন্তব্য পক্ষপাতদুষ্ট বলে পাল্টা অভিযােগ তােলা হয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে। টুইটারে এক বিবৃতি প্রকাশ করে সেই সময় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার জানান, নাগরিকত্ব সংক্রান্ত তথ্য তৈরি করার অধিকার রয়েছে প্রত্যেক দেশের। তার জন্য বিভিন্ন নীতির মাধ্যমে বিশেষ ক্ষমতা প্রয়ােগেরও অধিকার রয়েছে। তার পরেই রাজ্যসভায় বিতর্কিত ওই বিলটি পাশ করিয়ে নেওয়া হয়। তাতেই নড়েচড়ে বসেছে মার্কিন বিদেশ দফতর। তাতেই ভারতের দুশ্চিন্তার যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। তাদের দাবি, নাগরিকত্ব সংশােধনী বিল নিয়ে টানাপােড়েনের মদ্যেই বৃহস্পতিবার ভারত সফল বাতিল করেন বাংলাদেশের দুই মন্ত্রী। তারপর জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ভারত সফরও আচমকা স্থগিত হয়ে যায়। তার মধ্যে মার্কিন সরকারের এই মন্তব্যে আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের উপর চাপ বাড়বে বই কমবে না।