করোনা আবহেই চিন্তার ভাঁজ চওড়া হল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু)। বিশ্ব জুড়ে করোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের জেরে টিকাকরণ কর্মসূচি দারুণ ভাবে ব্যাহত হওয়ার ফলে যে সব রোগ হারিয়ে গিয়েছিল, তারা কি বার ফিরে আসার উপক্রম করছে?
সম্প্রতি লন্ডনের একটি জায়গায় ড্রেনের জলে পাওয়া গেছে পোলিওর জীবাণু। তার থেকেই উদ্বেগটা বেড়েছে।
পোলিও ভাইরাসের সংক্রমণ কি ফের ছড়াতে শুরু করেছে, আক্রান্ত কতজন, এই নিয়ে এখন তোলপাড় করে খোঁজ চলছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, জমা জলে যে ভাইরাস পাওয়া গেছে সেটি পোলিও টাইপ-২ ভাইরাস।
এর নাম টাইপ-২ ভ্যাকসিন-ডিরাইভস পোলিও ভাইরাস। এই ভাইরাসের সংক্রমণ ফের ছড়াতে শুরু করেছে কিনা সে নিয়ে খোঁজ শুরু হয়েছে।
পোলিও ভাইরাসঘটিত সংক্রমক রোগ। মূলত শিশুদেরকেই আক্রমণ করে। এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তিতে জল এবং খাবারের মাধম্যে ছড়িয়ে যায় এই রোগ।
পোলিওর সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথা ব্যথা, বমি ক্লান্তি, পিঠ বা পা শক্ত হয়ে যাওয়া, পেশীর দুর্বলতা।
পরিস্থিতি খুব খারাপ হলে, প্রদাহ এবং পায়ে পক্ষাঘাত শুরু হয়। পোলিও থেকে বাঁচতে তাই শিশুদের ওপিভি বা ওরাল পোলিও ভ্যাকসিন খাওয়ানো হয়।
জন্মের সময় প্রথম মাত্রা, ৬,১০ ও ১৪ সপ্তাহে প্রাথমিক মাত্রা ও ১৬-২৪ মাস বয়সে একটি বুস্টার দেওয়া হয়। লন্ডন শুধু নয়, এর আগে ভারতেও পাওয়া গিয়েছিল পোলিওর টাইপ-২ ভাইরাস।
২০১১ সালে ভারতকে পোলিওমুক্ত দেশ বলে ঘোষণা করা হলেও, নতুন করে পোলিওবাহী ওই ভাইরাস পাওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছিল।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লকডাউন ঘোষণার পর তো টানা দুই থেকে আড়াই মাস ধরে সারা দেশে টিকাকরণ কর্মসূচি অনেকাংশে বন্ধ হয়ে যায়।
তাই টিকার মাধ্যমে ভারতে যে রোগগুলি নির্মূল করার লক্ষ্যে কিছুটা পদক্ষেপ হয়েছিল, দীর্ঘ দিনের লকডাউনে সেগুলির ফিরে আসার আশঙ্কা আরও প্রবল হয় উঠেছে।
তেলঙ্গানার একটি ল্যাবরেটরিতে নর্দমার জল পরীক্ষা করতে গিয়ে পাওয়া গিয়েছল টাইপ-২ ভাইরাস। পোলিও যাতে নতুন করে না ছড়ায় সে কারণে আবারও প্রচার কর্মসূচী শুরু হচ্ছে ভারতে।
ছ’মাস থেকে তিন বছর বয়সী সব শিশুকে যাতে নিয়ম করে পোলিওর টিকা খাওয়ানো হয় সেদিকে জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে সরকারের তরফে।