ক্ষুব্ধ জনতার রোষে অগ্নিগর্ভ পাক অধিকৃত কাশ্মীর, কমপক্ষে ৩ জনের মৃত্যু, আহত বহু 

ইসলামাবাদ, ১২ মে –  অস্বাভাবিক হারে কর বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি সহ একাধিক বিষয়ের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জনতা। যার জেরে  অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি পাক অধিকৃত কাশ্মীরের।  সেই প্রতিবাদ দমন করতে রীতিমতো মারমুখী হয়ে ওঠে পাক পুলিশ এবং রেঞ্জার্সরা। চলেছে গুলি। শূণ্যে গুলি চালানোর পাশাপাশি  উন্মত্ত জনতাকে আয়ত্তে আনতে তাঁদের দিকে তাক করা হয়েছে বন্দুক। গোটা ঘটনায় ইতিমধ্যেই তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর মিলেছে। তবে গুলিবিদ্ধ হয়ে তাঁদের মৃত্যু হয়েছিল কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।   

পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ রাতারাতি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের রূপ নিয়েছে । বিক্ষোভকারীদের উপরে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তানের পুলিশ ও সরকারের বিরুদ্ধে। মৃত্যুর খবর মিল;আছে ৩ জনের,  আহত আরও অনেকে। উঠেছে আজাদির স্লোগান। পাকিস্তানের চরম আর্থিক সঙ্কটকাটাতে জনগণের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বিপুল করের বোঝা। এই অতিরিক্ত কর, মূল্যবৃদ্ধি ও বিদ্যুৎ সঙ্কটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দারা।
পিওকে-র রাজধানী মুজাফফরাবাদ, মিরপুর, সামাহনি, সেহানসা, রাওয়ালকোট-সহ একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ শুরু হয়। এরপরই সক্রিয় হয়ে ওঠে পাক বাহিনী।  বিক্ষোভকারী  জনতাকে বাগে আনতে তাদের উপর চড়াও হয় পুলিশ। ব্যাপক লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস এমনকী, শূন্যে একে-৪৭ চালানোর অভিযোগ ওঠেছ। বহু বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়। গ্রেফতার করা হয়েছে একাধিক নেতাকে।
 
প্রসঙ্গত, এই অশান্তির সূত্রপাত হয় শুক্রবার। পাক সরকারের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ নিয়ে শনিবারও বড়সড় প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছিল জম্মু ও কাশ্মীর জয়েন্ট আওয়ামি অ্যাকশন কমিটি। দোকানপাট বন্ধ রাখারও আর্জি জানানো হয়েছিল। কিন্তু এই মিছিল রুখতে মরিয়া ছিল পাক প্রশাসন। প্রতিবাদ রুখতে বিভিন্ন জায়গায় ইসলামাবাদ মোতায়েন করে পাক রেঞ্জার্স ও পুলিশবাহিনী। শুক্রবারই তহসিল ও মিরপুর জেলায় বড় মিছিল বের করা হয়। সেখান থেকে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হলে পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিভিন্ন রাস্তায় প্রতিবাদে নামেন বহু মানুষ। তার পরই অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করে ৭০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এমনকি সেখানে ১৪৪ ধারাও জারি করা হয়। এর পরেও বিক্ষোভ থামানো যায়নি।
 

এই প্রসঙ্গে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সমাজকর্মী আমজাদ আয়ুব মির্জা জানান , ‘নিরস্ত্র জনতাকে নিশানা করছে পাক পুলিশ বাহিনী। গুলি চালাচ্ছে। অন্তত ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আন্দোলনকারীরা এক পুলিশ কর্মীকে পিটিয়ে মেরেছে।’ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ভারত সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে আন্দোলনকারীরা।