ফের গাজায় নারকীয় হামলা চালাল ইজরায়েল। গাজার উত্তরে বেত লাহিয়া শহরে ইজরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৭৩ জন নিহত হয়েছেন। শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত গাজায় বোমা হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। তার জেরেই এই বিপুল সংখ্যক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আহতও হয়েছেন প্রচুর মানুষ। ধ্বংসাবশেষের নীচে আটকে রয়েছেন অনেকে। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত সরকার জানিয়েছে, ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে জোরকদমে উদ্ধারকাজ চলছে।
গাজার স্বাস্থ্য-আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, বেত লাহিয়াতে যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যা রয়েছে। এছাড়া ইন্টারনেট পরিষেবা স্তব্ধ হওয়ায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে হামাসের তরফের নিহতের সংখ্যা নিয়ে যে দাবি করা হয়েছে, তা ‘অতিরঞ্জিত’ বলে মন্তব্য করেছে ইজরায়েল। ইজরায়েলের দাবি, সেনাবাহিনী কাছে থাকা তথ্যের সঙ্গে হামাসের দেওয়া তথ্য মিলছে না। নিহতের সংখ্যা বাড়িয়ে বলছে হামাস সরকার।
হামাস নিয়ন্ত্রিত সরকারের বক্তব্য, জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বোমা হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। সেই কারণে কমপক্ষে ৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর বক্তব্য, হামাসের জঙ্গি কার্যকলাপ লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হয়েছে। সাধারণ মানুষ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, তা খেয়াল রাখা হচ্ছে। এর আগে গত শুক্রবার রাতে ইজরায়েলি বাহিনী ঘনবসতিপূর্ণ জাবালিয়ায় বোমা হামলা চালায়। সেই হামলায় কমপক্ষে ৩৩ জন নিহত হন।
শনিবার লেবাননের রাজধানী বেইরুটেও হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। ১২টি বিমান হামলা চালিয়েছে তারা। এই হামলার জেরে একটি বহুতল ভবন পুরোপুরি ধসে গিয়েছে। যদিও এই হামলায় হতাহতের তথ্য এখনও সামনে আসেনি। ইজরায়েলকে পাল্টা জবাব দিচ্ছে লেবাননের হিজবুল্লাহ বাহিনী। প্রায় প্রতিদিনই নিয়ম করে লেবাননের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হিজবুল্লাহ ইজরায়েলের উত্তরে রকেট হামলা চালাচ্ছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চলছে। চলতি বছর সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত লেবাননে ইজরায়েলের হামলায় অন্তত ১ হাজার ৪১৮ জন নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে ইজরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৪২ হাজার মানুষ। আর আহত হয়েছেন প্রায় ১ লক্ষশ। ইউনিসেফ জানিয়েছে, অশান্তির জেরে এখনও পর্যন্ত গাজায় ১৪ হাজার ১০০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।