ঢেউ নয়, এ যেন সুনামি। যার প্রবল ঝাপটায় কার্যত ধরাশায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সুনামির নাম ওমিক্রন—করোনা স্বাস্থ্য প্রদেশে ভাইরাসের নয়া ভ্যারিয়েন্ট। ওমিক্রনের আক্রমণে আমেরিকায় দৈনিক সংক্রমণ ১০ লক্ষও পেরিয়ে গেল।
অর্থাৎ কোভিড গ্রাফ দেখে যেমনটা আন্দাজ করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা, এ তো তার চেয়েও বেশি! কোনও কোনও একদিনেই করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ লক্ষ।
বলা হচ্ছে, এটাই সর্বকালের সর্বোচ্চ সংক্রমণ। এবং বিশ্বের করোনা সূচকেও এই মুহূর্তে এক নম্বরে আমেরিকা। ওমিক্রনের সংক্রামক ক্ষমতা মারাত্মক। তবে যত দ্রুত সংক্রমণ ঘটাচ্ছে, তার প্রভার কাটছে দ্রুত।
কিন্তু সেসবের আগে পরিসংখ্যানের লাগামছাড়া মাত্রা গোটা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিচ্ছে। বছরের শুরু থেকে নতুন আমেরিকার কোভিড গ্রাফের ঊর্ধ্বমুখী হারেই বিপদের ইঙ্গিত লুকিয়ে ছিল। তার আগে ব্রিটেনকে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছিল করোনায় নয়া স্ট্রেন।
ফ্রান্সও রক্ষা পায়নি আমেরিকাও যে সংক্রমণের স্বাস্থ্য নিরিখে সে পথে হাঁটছে, বোঝা গিয়েছিল। সোমবারের পরিসংখ্যান আশঙ্কাকেই সত্যি প্রমাণ করল। গত দু সপ্তাহে তিনগুণ বেড়েছে সংক্রমণ। আমেরিকার পরিষেবাও খানিকটা বেহাল।
তথ্য বলছে, গত সপ্তাহে যতজন রোগী করোনা নিয়ে হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন, নতুন সপ্তাহে তা দ্বিগুণ হয়েছে। শয্যা সংখ্যায় টান পড়ছে। বহু স্বাস্থ্যকর্মীর শরীরেও ছড়িয়েছে সংক্রমণ। যদিও ওমিক্রনের হামলা সামলে সুস্থ হওয়ার হারও বেশি, কিন্তু সাময়িক হলেও ব্যাহত হচ্ছে পরিষেবা।
গত এক বছরের এদেশে করোনায় বলি হয়েছেন ৮ লক্ষ ৩৭ হাজারের বেশি মানুষ। এখনিই ওমিক্রন সুনামি থামার কোনও লক্ষ্মণ নেই বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। নিউইয়র্ক, শিকাগো শহরে জনপরিষেবার সঙ্গে বহু মানুষ কোভিড পজিটিভ হওয়ায় অনেক কিছুই বন্ধ রাখা হয়েছে আপাতত। নিউইয়র্কে ছোটদের স্কুল বন্ধ।
এরই মধ্যে কিছুটা আশার আলো আন্তর্জাতিক ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা ফাইজার। কোভিড ভ্যাকসিনকে আরও খানিকটা ‘মডিফাই’ করার কাজ শুরু হয়েছে। সংস্থার দাবি, এতে সবরকম ভ্যারিয়েন্টের হামলা রুখে দেওয়া সম্ভব হবে।