করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮ জন মারা গেছেন। একদিনে মৃত্যুর দিক দিয়ে এটাই এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংখ্যা। এ নিয়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৬১০ জনে পৌঁছাল। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১ হাজার ৭৬৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের ১২ সপ্তাহ আজ শেষ হলো। এর আগে বৃহস্পতিবার দেশে করোনায় সংক্রমিত ২ হাজার ৫২৩ জন শনাক্ত হওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। মারা গিয়েছিলেন ২৩ জন।
সব মিলিয়ে দেশে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন মোট ৪৪ হাজার ৬০৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৩৬০ জন। এ নিয়ে মোট ৯ হাজার ৩৭৫ জন সুস্থ দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়লেও আগামিকাল থেকে সীমিত পরিসরে সব কিছু খুলে দেওয়া হচ্ছে।
সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত গণপরিবহন, লঞ্চ, ট্রেন, দোকানপাট, শপিং মল, ব্যবসা বাণিজ্য সবকিছু সীমিত আকারে চলবে আগামি ১৫ জুন পর্যন্ত তবে সারা দেশের শিক্ষন্ত্রতিষ্ঠান আগামি ১৫ জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এর মধ্য দিয়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে চলমান সাধারণ ছুটির আবরণে থাকা লকডাউনের আপাতত অবসান হচ্ছে ৬৬ দিন পর।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা আদেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব কিছু খুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এদিকে লকডাউন তুলে দিয়ে সীমিত আকারে সব কিছু খুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের পরপরই গত বৃহস্পতিবার থেকেই ঢাকামুখী মানুষের ঢল শুরু হয়েছে।
গতকাল সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার কর্মজীবী মানুষ ঢাকায় আসতে শুরু করেন। মানুষের এই যাত্রাপথে কোনোরকম স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। রোববার থেকে ট্রেন, লঞ্চ এবং সোমবার থেকে দূরপাল্লার বাস সার্ভিস চালু করার প্রস্তুতি নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং বাস ও লঞ্চ মালিকরা। ১ জুন থেকে শুরু হবে বিমানের অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইট।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, করোনাভাইরাসের বিস্তারের ব্যাপক ঝুঁকির মধ্যে কিছু খুলে দিয়ে সরকার দেশকে চরম বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। শনিবার সকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণের পর তিনি এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আগামিকাল থেকে সাধারণ ছুটিও থাকবে না, গণ-পরিবহন খুলে দেওয়া হবে। সরকার প্রথম থেকেই ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সমন্বয় নেই কোথাও। সরকারের সিদ্ধান্তগুলো সম্পূর্ণভাবে অপরিপক্কই নয়, অদূরদৃষ্টি সম্পন্ন ও প্রজ্ঞাবিহীন। কোনো রকম চিন্তা ছাড়া একেবারে দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে এই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হচ্ছে। এটা একেবারে ভুল সিদ্ধান্ত এবং এটা আরও চরম বিপদের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে দেশকে।