নতুন আফগান সরকার ঘােষণা করা হল তালিবানের তরফে। তবে মােল্লা আবদুল গনি বরাদর নয়, তালিবান সরকারের শীর্ষে বসলেন মহম্মদ হাসান আখুন্দ। তিনিই হচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী। দেশের উপপ্রধানমন্ত্রী পদ পাচ্ছেন বরাদর। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই ঘােষণা করেন তালিবান মুখপাত্র।
তালিব মুখপাত্র আহমাদুল্লা ওয়াসিক জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা নতুন সরকারের কর্মসূচি ঘােষণা করব। তবে তার আগে কে কোন পদে থাকছেন, সেটি ঘােষণা করা হচ্ছে। তার নাম অন্যান্য তালিবান নেতাদের মতাে খুব একটা শােনা যায় না। তিনি নীরবে থেকেই কাজ করতে পছন্দ করেন।
গত দু’বছর ধরে তিনি আড়ালে থেকেই তালিবানকে মজবুত করার কাজ করে গিয়েছেন। তিনি হলেন মােল্লা হাসান আখুন্দ। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের জঙ্গি তালিকায় তার নাম রয়েছে। সেই হাসান আখুন্দকেই তালিবানরা চাইছে সরকারের মাথায় বসাতে। আনুষ্ঠানিকভাবে তার নাম খুব শীঘ্রই ঘােষণা হয়ে যাবে বলে জানা যাচ্ছে।
হাসান আখুন্দের পুরাে নাম মােল্লা মহম্মদ হাসান আখুন্দ। তালিবানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্যের বাড়ি কান্দাহার প্রদেশে। দলের মধ্যে তার বিপুল প্রভাব রয়েছে। কম কথা বলেন। তিনি গােড়া ধার্মিক। তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য দলের অন্যদের মন জয় করে নেন অনায়াসে।
এর আগে ১৯৯৬ সালে আফগানিস্তানে যখন তালিবান ক্ষমতায় এসেছিল তখন আখুন্দের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। প্রথমে তিনি বিদেশমন্ত্রী, পরে হন উপপ্রধানমন্ত্রী। এছাড়া কান্দাহারের গভর্নরও ছিলেন তিনি। আমেরিকার গােয়েন্দারা মনে করেন তিনি সবচেয়ে দক্ষ কম্যান্ডার তালিবানদের মধ্যে। পাকিস্তানের মাদ্রাসায় তিনি পড়াশােনা করেছেন।
তালিবানরা ২০০১ সালে আখন্দকে প্রতিরক্ষা,অভ্যন্তরীণ বিষয়, সুপ্রিম কোর্ট, সংস্কৃতি এবং গােয়েন্দা এসব সামলানাের দায়িত্ব দেন। ২০১০-এ তিনি ধরা পড়েছিলেন বলে বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হয়। পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হামিদ ফায়েজ।
তারই প্রত্যক্ষ তদারকিতে পাহাড়ি যুদ্ধে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কয়েক হাজার পাক সেনা পঞ্জশিরে প্রতিরােধ গুড়িয়ে দিয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম দাবি করছে। গত সপ্তাহে পঞ্জশিরে নিহত এবং গ্রেফতার হওয়া একাধিক তালিবান যােদ্ধার কাছ থেকে পাক সেনার পরিচয়পত্র উদ্ধার করেছেনর্দান অ্যালায়েন্স।
মধ্য এশিয়ার একটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, পঞ্জশিরে তালিবানের হয়ে লড়াইটা লড়েছে পাক সেনার ‘নর্দান লাইট ইনফ্যানট্রি’ এবং ‘এলিট স্পেশাল সার্ভিস’ – এর কমান্ডােরা। তাদের সাহায্য পাওয়ার ফলেই পাহাড়ের যুদ্ধে দক্ষ নয় তালিবানের পক্ষে পাহাড়ে ঘেরা পঞ্জশিরে পৌঁছনাে সম্ভব হয়েছে। নর্দান অ্যালায়েন্সের নেতা আহমেদ মাসুদও এই অভিযােগ করেছেন।