শপথগ্রহণ শ্রীলঙ্কার নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি দিশানায়েকের, শুভেচ্ছাবার্তা মোদী, খাড়্গের

সোমবার সকালে শপথগ্রহণ করলেন শ্রীলঙ্কার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট অনুরা দিশানায়েক। রবিবারই শ্রীলঙ্কার নবম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। বামপন্থী দল জনতা পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট বা বিমুক্তি পেরামুনা(জেভিপি) দলের নেতা হিসেবে ভোটে জয়লাভ করেছেন তিনি। উল্লেখ্য, তিনি শ্রীলঙ্কার প্রথম বামপন্থী প্রেসিডেন্ট।

কলম্বোতে প্রেসিডেন্টের সচিবালয়ে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়েছে। দিশানায়েককে শপথবাক্য পাঠ করালেন শ্রীলঙ্কার চিফ জাস্টিস জয়ন্ত জয়সূর্য।

রবিবার সন্ধেবেলা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়। প্রথম দফার ভোট গণনায় দিশানায়েক বা তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী, পার্লামেন্টের বিরোধী দলনেতা সজিথ প্রেমদাস কেউই প্রয়োজনীয় ভোটসংখ্যার গাঁট পেরোতে পারেননি। নির্বাচনী বিধি অনুসারে প্রথম দফার ভোটের ৫০ শতাংশ পাননি কেউই। দিশানায়েক পেয়েছিলেন ৪৯ শতাংশ ভোট। দ্বিতীয় দফার ভোট গণনায় দিশানায়েক ৪৩ শতাংশ ভোট পান। সব মিলিয়ে, মোট ৪২.৩১ শতাংশ ভোট পান তিনি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন বিরোধী দলনেতা প্রেমদাস। তিনি পেয়েছেন ৩২.৭৬ শতাংশ ভোট। মাত্র ১৭.২৭ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে।


দিশানায়েকের জয় ঘোষিত হওয়ার পর থেকেই শুভেচ্ছার বান ডেকে যায়। নিজের এক্স হ্যান্ডলে শুভেচ্ছা জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লেখেন, ‘অনুরা দিশানায়েক, আপনাকে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভের জন্য শুভেচ্ছা জানাই। ভারতের ‘নেবারহুড ফার্স্ট পলিসি’ এবং ‘সাগর’ নীতির দিক থেকে শ্রীলঙ্কার স্থান বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের জনগণ এবং এই সমগ্র অঞ্চলের হিতসাধনের জন্য বহুবিধ ক্ষেত্রে আপনার সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কাজ করবার ইচ্ছে রইলো।’ তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে দিশানায়েক এক্স-এ লেখেন, ‘আপনার শুভকামনার জন্য ধন্যবাদ, প্রধানমন্ত্রী মোদী। আমাদের দেশের মধ্যে যোগসূত্রকে দৃঢ় করার জন্য আপনার প্রয়াসের পাশে রয়েছি। আমরা একসঙ্গে আমাদের জনগণ এবং সমগ্র অঞ্চলের উন্নতির জন্য কাজ করতে পারি।’

শ্রীলঙ্কায় ভারতের হাই কমিশনার সন্তোষ ঝা দিশানায়েকের সঙ্গে রবিবারই দেখা করে তাঁকে শুভেচ্ছা জানান। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের জাতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গেও তাঁকে কংগ্রেসের তরফ থেকে শুভেচ্ছাবার্তা জানান।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে অর্থনৈতিক সঙ্কট এবং গণঅভ্যুত্থানের চাপে দেশত্যাগ করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে এবং তাঁর ভাই ও প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে। গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিযুক্ত হন রনিল। কিন্তু, অর্থনৈতিক সঙ্কটকে খুব একটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে তাই আনা হয় অনাস্থা প্রস্তাব এবং প্রেসিডেন্ট হন বামপন্থী জোটের নেতা অনুরা দিশানায়েক, যিনি ‘একেডি’ বলেও সমধিক পরিচিত।