ভারতের সকল আপত্তি উড়িয়ে ভারতের দখলকরা ভূখণ্ড সহ যে মানচিত্র তৈরি করেছে তা এবার গুগল মারফত সারা বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দিতে তৎপর কেপি শৰ্ম ওলির সরকার। ভারতের প্রায় চারশো বর্গ কিলোমিটার ভূখণ্ড নেপালে জুড়ে নিয়ে তৈরি নতুন মানচিত্র বিষয়ে ভারত, রাষ্ট্রসংঘ ও গুগলকে অবহিত করতে চায় নেপালের ওলি সরকার।
নেপালের ভূমি ব্যবস্থাপনামন্ত্রী রবিবার সংবাদ মাধ্যমকে জানান, আমরা কালাপানি, লিপুলেখ, লিম্পিয়াধুর সহ সংশোধিত মানচিত্র ভারত সহ রাষ্ট্রপুঞ্জের বিভিন্ন সদস্যরাষ্ট্র ও সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনের কাছে পাঠাব। আগস্ট মাসের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া শেষ হবে। নেপালের সরকারি জরিপ দফতরের তরফে ইতিমধ্যেই সংশোধিত মানচিত্রের চার হাজার ইংরেজি কপি ছাপানো হয়েছে। সেগুলি রাষ্ট্রপুঞ্জ, গুগল সহ নানা আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে পাঠানো হবে।
নেপাল সরকার জানিয়েছে, স্থানীয় ভাষায় মুদ্রিত পচিশ হাজার কপি নতুন মানচিত্র ইতিমধ্যেই নানা সরকারি কার্যালয়ে বিলি করা হয়েছে। পঞ্চাশ টাকার বিনিময়ে নতুন মানচিত্র সংগ্রহ করতে পারবেন আমজনতা তিব্বতের কৈলাস ও মানস সরোবর যেতে তীর্থযাত্রীরা প্রাচীনকাল থেকেই লিপুলেখ গিরিপথ ব্যবহার করে আসছে।
প্রতি বছর জুন থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে গিরিপথের অদূরে চিন অধিকৃত তিবৃত এবং নেপালের গ্রামগুলির বাসিন্দারা স্থানীয় পণ্য বিক্রির উদ্দেশ্যে এখানে আসেন। সম্প্রতি ধরচুলা থেকে লিপুলেখ পর্যন্ত প্রায় আশি কিলোমিটার রাস্তা বানিয়েছে ভারত। ৮ মে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সেই রাস্তা উদ্বোধন করার পর কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল নেপাল।
৩১ মে নেপালের আইনমন্ত্রী শিমায়া তুম্বাহাম্পি উত্তরাখঞ্জে কালাপানি, লিপুলেখ, লিম্পিয়াধুরা জুড়ে তৈরি নতুন মানচিত্রের খসড়া পেশ করেছিলেন। ১৩ জুন নেপাল পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি সভা ও ১৮ জুন উচ্চকক্ষ রাষ্ট্রীয় সভার অধিবেশনে সর্বসম্মতিতে মানচিত্রের খসড়া অনুমোদন করে সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ করা হয়।
দিল্লির আপত্তিকে পাত্তা দেয়নি ওলি সরকার। নেপালের এই অতিসক্রিয়তার পিছনে যে চিনের উস্কানি রয়েছে তার অভিযোগ ওঠে। শাসক কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপালের কেন্দ্রীয় পরিষদের সদস্যরা ভারতের মতো প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক নষ্ট করার অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী ওলিকে ইস্তফা দিতে বলে। যদিও পার্টির নির্দেশ ওলি অগ্রাহ্য করেছেন।
এমন পরিস্থিতিতে গুগলের মতো সার্চ ইঞ্জিনে উত্তরাখণ্ডের এলাকা নেপালের জমি বলে দেখানোর চেষ্টা করে ওলি সরকার নেপালের আমজনতার ভাবাবেগকে উস্কে দিতে চাইছে বলে তথ্যভিজ্ঞ মহলের ধারণা।