মায়ানমারে অভ্যুত্থান, আটক সু চি সহ বহু রাজনীতিক, এক বছরের জন্য দেশের দখল নিল সেনা

প্রতিকি ছবি (File Photo: iStock)

মায়ানমারে সেনা ও সরকারের মধ্যে উত্তেজনা চরমে উঠলাে। সেনার হাতে আটক হলেন, দেশের নেত্রী তথা স্টেট কাউন্সিলার ( প্রধানমন্ত্রীর পদের সমান ) আং সান সু চি। আটক করা হয়েছে দেশের প্রেসিডেন্ট উইন মিস্তকেও। সােমবার ভােকে তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কোনও এক অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। দেশের প্রথম সারির অনেক রাজনীতিককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

কূটনীতিকদের একাংশের দাবি, সেনা অভ্যুত্থান হয়েছে সে দেশে। সেই আশঙ্কাকে আরও বাড়িয়ে আগামী এক বছরের জন্য দেশের দখল নেওয়ার কথা ইতিমধ্যে জানিয়েছে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা মিয়াওয়াদি টিভি। এর আগে ১৯৬২ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত প্রায় পাঁচ বছর মায়ানমারে সেনা শাসন কার্যকর ছিল।

নভেম্বরের নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযােগ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই দেশের সরকার ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে টালবাহানা চলছিল। এদিন আচমকাই পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই কথা বলেছেন, লিগ ফর ডেমােক্রেসির মুখপাত্র নমিয়ে ন্যুন্ত। তিনি বলেন, দেশের মানুষকে বলব , উত্তেজনার বশে কিছু ঘটিয়ে ফেলনে না। আইন মেনে চলুন।


যে কোনও মুহূর্তে তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে। বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে মিয়ো। প্রথমবার ফোনে কথা বলার পর দ্বিতীয়বার আর তার সঙ্গে যােগাযােগ করতে পারেনি সংবাদসংস্থা। ভাের থেকে রাজধানী নেইপিদ-এর সমস্ত টেলিযােগাযােগ বিচ্ছিন।

সেখানে কারও সঙ্গে যােগাযােগ করা যাচ্ছে না। সমস্যা রয়েছে ইন্টারনেটেরও। তাই এই মুহুর্তে রাজধানীতে কী পরিস্থিতি তা জানা যাচ্ছে না। বয় টার্সের সঙ্গে মায়ানমার সেনার মুখপাত্রের সঙ্গেও যােগাযােগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি বলে জানা গিয়েছে।

নভেম্বরের ওই ভােটে বিপুল ভােটে জয়ী হয় এনএলডি। তারপর সােমবারই দেশের সংসদের প্রথম অধিবেশন হওয়ার কথা ছিল। তার মধ্যেই এই ঘটনা। ইয়াঙ্গনে সিটি হল সহ সর্বত্র সেনা মােতায়েন রয়েছে বলে খবর। যান্ত্রিক গােলযােগের জেরে কোনও খবর সম্প্রচার করতে পারছে না বলে সােশ্যাল মিডিয়া পেজে জানিয়েছে। সে দেশের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এমআর টিভি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনএলডির এক সাংসদ রয়টার্সকে জানিয়েছেন, দলের কেন্দ্রীয় এক্রিসকিউটিভ কমিটির সদস্য হান থার মিন্তকেও আটক করা হয়েছে।

দীর্ঘ দেড় দশক বন্দিদশা কাটিয়ে ২০১৫ সালে বিপুল ভােটে জয়ী হয়ে দেশের নেত্রী নির্বাচিত হন নােবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী সু চি। কিন্তু দেশের পশ্চিমে রাখাইন। প্রদেশ থেকে মুসলিমদের উচ্ছেদ ও গণহত্যার অভিযােগে ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক মহলে সুচি-র ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়।

কিন্তু দেশের রাজনীতিতে আগের মতােই জনপ্রিয়তা ছিল তার। কিন্তু নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযােগ ঘিরে সম্প্রতি আঙুল উঠতে শুরু করে তার দিকে। সে দেশের নির্বাচন কমিশন অবশ্য সেই অভিযােগ উড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু সংবিধান ও আইন রক্ষার দায়িত্ব তাদের হাতেই বলে শনিবার ঘােষণা করে। সে মায়ানমারের সেনা। তার পর থেকেই অভূত্থানের আশঙ্কা করা হচ্ছিল।