চলতি বছরের শেষেই হতে পারে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করবে কি না তা তারাই ঠিক করবে বলে এক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি এও বলেন, এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনই ঠিক করে দেবে কে বা কারা নির্বাচনে অংশ নেবে।
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিয়েছেন মুহাম্মদ ইউনূস। শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ভারতে চলে যান। তাঁর দল আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে কি না তা এখনও পর্যন্ত অনিশ্চিত। বাংলাদেশের আদালত শেখ হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে। ইউনূস বলেন, ‘তারাই সিদ্ধান্ত নেবে, তারা নির্বাচনে অংশ নেবে কি না। আমি তো তাদের হয়ে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারি না। এটি ঠিক করবে নির্বাচন কমিশন।’
চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে বলে জানিয়েছেন ইউনূস। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম জানায়, শেখ হাসিনাকে গত বছর ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর নতুন সরকারের দায়িত্ব নিতে বলায় তিনি বিস্মিত হয়েছিলেন বলে সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন। বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার কোনও ধারণা ছিল না যে আমি সরকারের নেতৃত্ব দেব। আমি এর আগে কখনও কোনও সরকারি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকিনি। এরপরও আমাকে পরিস্থিতি বুঝে কাজ করতে হয়েছিল।’ ইউনূস আরও বলেন, ‘একবার এটি স্থির হয়ে যাওয়ার পর আমরা অন্যান্য বিষয়গুলি সংগঠিত করতে শুরু করি। সেক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং অর্থনীতি মজবুত করাকে দেশের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।’
হাসিনার সরকারের পতনের পর অভ্যুত্থান রোধ করতে গণহত্যার অভিযোগে বিগত সরকারের মন্ত্রী এবং শীর্ষ নেতা ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই জারি হয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। সেইসঙ্গে দাবি উঠেছে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করার। তবে এই দাবি উঠলেও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এখনও এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি। তবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্র লীগকে।
গত বছরের ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেওয়ার সময় থেকেই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল দেশের সংস্কার ও নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন করে হবে সেই প্রশ্ন বারবার উঠছে। সেইসঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিতে পারবে কি না। প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসিরউদ্দিনকে হাসিনার দলের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার বা আদালত যদি নিষিদ্ধ ঘোষণা না করে, তবে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ভোটে আওয়ামী লীগের অংশ নিতে কোনও বাধা নেই।