মায়ানমারে রাতারাতি সেনা অভুত্থানে স্তম্ভিত গােটা বিশ্ব। কেন গণতন্ত্রের পরিবর্তে ফের সেনা শাসনের দিকে হাঁটলাে এই দেশ? সকলের মনেই বারবার উঁকি দিচ্ছিলাে এই প্রশ্ন। এবার সেই প্রশ্নের সরাসরি জবাব দিলেন মায়ানমারের সেনাপ্রধান জেনারেল মিন আঙ হেইং। প্রসঙ্গত সেনা অভ্যুত্থানের পর এই প্রথম প্রকাশ্যে বক্তব্য রাখলেন তিনি।
মায়ানমারের আর্মি চিফ জেনারেলের কথায়, দেশকে বাঁচাতে সেনা অভুত্থান অনিবার্য ছিল। নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার দেশের মানুষের অভাব অভিযােগ মেটাতে পারছিলাে না। ভােট প্রক্রিয়ায় গলদ নিয়ে মানুষের মধ্যে অভিযােগ ছিল। কিন্তু তার সদুত্তর সরকারের কাছে ছিল না। তিনি আরও জানিয়েছেন, দেশের শাসনভার সেনাবাহিনী যাতে নিজেদের হাতে নেয়, তার জন্য নাকি অনেকে অনুরােধ করেছিলেন। এরপর আমাদের কাছে আর কোনও উপায় ছিল না। তাই আইন মেনেই মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান ঘটানাে হল।
সােমবার সকালে দেশটির রাষ্ট্রপ্রধান আং সাং সু চি সহ বেশ কয়েকজন নেতাকে আটক করে সেনাবাহিনী। মায়ানমারের শাসক দল ন্যাশনাল লিগ অব ডেমােক্রেটিক পার্টির মুখপাত্র মায়ও নায়ান্ট সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছিলেন, সােমবার ভােরে আচমকা কাউন্সিলার সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও অন্যান্য নেতাকে আটক করে সেনাবাহিনী। জনতার কাছে আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, আমি জনতার কাছে আর্জি জানাচ্ছি এই ঘটনায় আবেগে ভেসে কোনও পদক্ষেপ করবেন না। সবাই আইন মেনে চলুন।
প্রসঙ্গত সােমবার থেকেই সে দেশে সংসদের অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই সেনাবাহিনীর এই পদক্ষেপকে সামরি অভ্যুত্থান বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশেষজ্ঞ মহল।
সেদিন থেকেই মায়ানমারের রাজধানী নিওপিডের ইন্টারনেট ও ফোন যােগাযােগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একটি পােস্টে সরকার নিয়ন্ত্রিত চ্যানেল এমআরটিভি জানিয়েছে প্রযুক্তিগত সমস্যার জন্য তারা কোনও প্রােগ্রাম চালাতে পারছে না। তবে এর নেপথ্যে সেনাবাহিনী রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রসঙ্ঘও। দ্রুত সে দেশে গণতন্ত্র ফেরানাের বার্তা দিয়েছে আমেরিকাও। এরপরেই প্রকাশ্যে এসে মায়ানমারে সেনা অভুত্থানের কারণ জানালেন সেনাপ্রধান।
