বার্লিন, ১৯ আগস্ট – মারিয়ান বাখমায়ার। তাঁর শিশুকন্যার ধর্ষক ও খুনিকে আদালতে দাঁড়িয়ে গুলি করে খুন করেছিলেন। কলকাতার আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পর এখন আলোচনায় এই একটি নাম। এই সেই মা, যিনি সরকার, প্রশাসন, বিচার ব্যবস্থার উপরে আস্থা হারিয়ে শিশুকন্যার ধর্ষক ও খুনিকে আদালতে দাঁড়িয়ে গুলি করে খুন করেন। ঘটনাটি ঘটে জার্মানিতে।
ভয়াবহ এই ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে যায় গোটা জার্মানি। শুরু হয় অপরাধের বিচার। ১৯৮১ সালের ৬ মার্চ ছিল শুনানির তৃতীয় দিন। আদালত চত্বরে তখন মাত্রাছাড়া ভিড়। তার মধ্যেই কাঠগড়ায় দাঁড়ানো ক্লাউসকে লক্ষ্য করে আচমকা গুলি চালান মারিয়ানা। পরপর সাতটি গুলি করেন মৃতা শিশুর মা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্তের।
আটক করা হয় মারিয়ানকে। জেরায় তিনি জানান, মেয়ের ধর্ষক ও খুনিকে নিকেশের পরিকল্পনা করেই এসেছিলেন তিনি। ঘটনার দিন ০.২২ ক্যালিবারের একটি বেরেটা পিস্তল নিয়ে আদালতে ঢোকেন মারিয়ান। শুনানি শুরু হতেই সুযোগ বুঝে ‘খুনি’ ক্লাউসকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে শুরু করেন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ক্লাউসের। খুনের দায়ে ১৯৮৩ সালে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন অ্যানার মা। ছ’বছরের জেল হয় তাঁর। ছাড়া পাওয়ার কয়েক বছরের মধ্যেই প্রাণঘাতি ক্যানসার কেড়ে নেয় মারিয়ানের জীবন। কন্যা অ্যানের পাশেই সমাধিস্থ করা হয় মাকে।
সম্প্রতি কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর গোটা দেশ তোলপাড়। বিচার চেয়ে প্রতিদিন পথে নামছেন শ’য়ে শ’য়ে সাধারণ মানুষ। সাম্প্রতিক এই পরিস্থিতিতেই আলোচনায় ফিরেছে সুদূর জার্মানির মারিয়ানের কথা, নিজের মেয়েকে বিচার পাইয়ে দিতে যিনি নিজের হাতে আইন তুলে নিয়েছিলেন।