৪ মাস আগে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর জল মাপছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। তিনি চেয়েছিলেন বাংলাদেশে ভোটের মাধ্যমে শাসন ক্ষমতা দখল করতে। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে এখনও কোনও ভাবনা নেই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের। এই নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে বিএনপি-র। নির্বাচন নিয়ে ইতিমধ্যেই চাপ বাড়িয়েছেন বিএনপি-র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর মধ্যেই জানা গেলো মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ ঘিরে জনসমক্ষে আসতে চলেছেন খালেদা জিয়া। সুত্রের খবর, আগামী ২১ ডিসেম্বর ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সেই সমাবেশে খালেদা জিয়াকে প্রধান অতিথি হিসেব থাকার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত। তাঁর দাবি, বিএনপি চেয়ারপার্সন সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। ২১ তারিখের সমাবেশে শুধু জিয়াই নন, লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকবেন জিয়াপুত্র তারেক রহমান।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ৭ বছর পর নেত্রী খালেদা জিয়া প্রকাশ্য কোনও সমাবেশে অংশ নিতে চলেছেন। ২১ ডিসেম্বর দুপুর ২টো নাগাদ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মুক্তিযোদ্ধা দিবসের আয়োজন করা হচ্ছে। এই দিনটিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলো। সেখানেই বাংলাদেশি জনতার মুখোমুখি হবেন খালেদা।
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত জানান, এই উৎসব উদযাপন করতে সারা দেশ থেকে মুক্তিযোদ্ধারা ঢাকায় আসবেন এবং ২১ ডিসেম্বর। ওইদিন তাঁদের সমাবেশে খালেদা জিয়া সশরীরে উপস্থিত থাকবেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তথা জিয়ার পুত্র তারেক রহমানও লন্ডন থেকে ওই সমাবেশে ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন।
এর আগে গত ২০১৭ সালের ১২ নভেম্বর ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শেষবার দলের এক সমাবেশে ভাষণ দিয়েছিলেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তৎকালীন আওয়ামি লিগ সরকারের আমলে দুর্নীতির দুই মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল । দু বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন জিয়া। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে তাঁর সাজা স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেয়। সেই থেকে ৬ মাস পরপর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ
বাড়াচ্ছিল সরকার।
তবে বাংলাদেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছে খালেদা জিয়া। তারই নির্দেশে সক্রিয়তা বাড়াচ্ছে বিএনপি-র।
একইসঙ্গে ইউনূস সরকারের উপর নির্বাচনের চাপ বাড়াচ্ছে খালেদার দল। নানা রাজনৈতিক কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। যার মধ্যে বিশেষ নজরে ২১ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ। তাতে খালেদা ঠিক কী বক্তব্য রাখেন, সেদিকে নজর সবমহলের।