জইশ জঙ্গি মাসুদ আজহার মৃত?

মাসুদ আজহার (Photo by Aamir QURESHI / AFP)

দিল্লি, ৩ মার্চ- জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের কি মৃত্যু হয়েছে? সংবাদমাধ্যমের একাংশ এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত খবর এই নিয়ে তুমুল সংশয় তৈরি হয়েছে। যদিও এই খবর লেখা পর্যন্ত পাকিস্তান সরকারের তরফে এই খবরের কোনও সত্যতা স্বীকার করা হয়নি।

পাকিস্তানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, ভারতীয় বিমানহানায় গুরুতর জখম হয়েছিল মাসুদ আজহার। একই সঙ্গে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি তার পাকিস্তানের কথা স্বীকার করে নিয়ে জানিয়েছিলেন, কিডনির সমস্যায় গুরুতর অসুস্থ মাসুদ। মাঝেমাঝেই ডায়ালেসিস করানোর জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হত। তিনি এমনটাও বলেছিলেন, মাসুদ এতটাই অসুস্থ যে বাড়ি থেকে বের হতেও পারছেন না। বাড়িতেই তার চিকিৎসা  চলছে।

পুলওযায় সিআরপিএফ’র কনভয়ের ওপর হামলার কথা প্রথম দিনেই স্বীকার করেছিল জইশ-এ-মহম্মদের মাথা মাসুস আজহার। পাকিস্তানের মাটিতে বেড়ে ওঠা এই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের মাথা মাসুদ আজহারকে আর্ন্তজতিক জঙ্গি ঘোষণার দাবি সেদিন থেকে আবার নতুন করে জানাতে থাকে ভারত। ভারতের সঙ্গে একই সঙ্গে রাষ্ট্রসংঘে এই দাবি তোলে আমেরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্স। এদিকে ভারতের গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ভারতের বায়ুসেনার ১২ টি মিরাজ মুজফ্‌ফরাবাদে হামলা করার সময় মাসুদ আজহার ও তার ভাই গুরুতর জখম হয়েছিল বলে খবর এসেছিল। তেমনই সে যে কিডনির সমস্যায় বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ সে কথাও পাকিস্তানের তরফ থেকে স্বীকার করে নেয়া হয়েছে। তবে মাসুদ আজহারের মৃত্যু হয়েছে এই খবর রটিয়ে দিয়ে মাসুদকে ভারত ও আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলির নজর থেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও হতে পারে। ফলে যতক্ষণ না পাকিস্তান সরকারিভাবে মাসুদ আজহারের মৃত্যুর খবর জানাচ্ছে, ততক্ষণ এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। উল্লেখ্য, মাসুদ আজহারের মৃত্যুর খবর রটে যাওয়ার পর ভারতের বিদেশমন্ত্রক থেকেও কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।


কোনও সরকারি সুত্রে বিষয়টিকে মান্যতা দেওয়া না হলেও মাসুদ আজহারের মারা যাওয়ার খবর সত্যি হওয়ার সম্ভাবনা ষোলো আনা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। মাসুদের মৃত্যুর দুটি সম্ভাবনা উঠে আসছে। প্রথমত ভারতের হামলায় গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেই আঘাত থেকেই তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। দ্বিতীয়ত, পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী যেমন বলেছিলেন, কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত ছিল মাসুদ। মুত্রাশয়ে সংক্রমণ হওয়া রাওয়ালপিন্ডি সেনা হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছিল। সেখানেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে নিজের বাড়িতে মাসুদ মারা গিয়েছে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে খবর ঘুরছে, তার সত্যতা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে ভারতীয় সেনা-গোয়েন্দাদের।

অন্যদিকে পাকিস্তানের মাটিতে ভারতীয় বাহিনীর হামলা নিয়ে দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক জটিলতা তৈরি হয়েছে। হামলার পর কেন্দ্রীয় একাধিক সূত্র দাবি করেছিল, প্রায় সাড়ে তিনশো জঙ্গিকে খতম করা হয়েছে ওই অভিযানে। সরকারও জানায়, যথাসময়ে এই হামলার প্রমাণ পেশ করা হবে। এরই মধ্যে মাসুদ আজহারের ভাই জানিয়েছে, মাসুদের ভাই মহম্মদ আম্মার জানিয়েছে, ভারতীয় বায়ুসেনা বালাকোটে জঙ্গি ট্রেনিং ক্যাম্পে হামলা চালিয়েছে। একটি অডিও বার্তায় তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে এই হামলায় ওই এলাকার ট্রেনিং ক্যাম্পগুলির বড় ক্ষতি হয়ে গেয়াছে।