ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু 

লন্ডন, ৪ জুলাই – বৃহস্পতিবার সাধারণ নির্বাচন  শুরু হল ব্রিটেনে। জনমত সমীক্ষার ফল সত্যি হলে, প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনকের নেতৃত্বাধীন কনজ়ারভেটিভ পার্টির দ্বিগুণ ভোট এবং তিন গুণ আসন নিয়ে ক্ষমতা দখল করতে চলেছে কিয়ের স্টার্মারের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি। ব্রিটেনে শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময় সকাল এগারোটা নাগাদ শুরু হয় ভোটগ্রহণ। একদফায় নির্বাচন হবে ৬৫০টি আসনের জন্য। এদিন ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরেই শুরু হবে গণনা। ভারতীয় সময় শুক্রবার সকালেই নিশ্চিত হয়ে যাবে, ব্রিটেনে সরকার গঠন করতে চলেছে কোন দল। ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক কি ফের প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে ফিরতে পারবেন? সেই উত্তর মিলবে ৪ জুলাই বিকেলে।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ‘হাউস অফ কমন্স’-এ মোট আসন ৬৫০। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ‘জাদু সংখ্যা’ ৩২৬। ‘দ্য গার্ডিয়ান’-সহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম এবং জনমত সমীক্ষার পূর্বাভাস, লেবার পার্টি এ বার ৪০০-র বেশি আসন পেয়ে ১৪ বছরের কনজ়ারভেটিভ শাসনের ইতি টানতে চলেছে।
ভোটের আগের যাবতীয় সমীক্ষার দাবি, ১৪ বছরের কনজারভেটিভ সরকারের পতন ঘটতে চলেছে সাধারণ নির্বাচনে। গত কয়েকমাসে কনজারভেটিভ পার্টির প্রতি ব্রিটেনের আমজনতার আস্থা প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে। একের পর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে , ব্রিটিশ রাজনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ ফল করতে পারে কনজারভেটিভ পার্টি। এহেন পরিস্থিতিতে নির্বাচনে হার অবধারিত বলেই মত দলের একটা বড় অংশের। এমনকি নিজের কেন্দ্র রিচমন্ড থেকে হেরেও যেতে পারেন সুনাক, এমন সম্ভাবনাও রয়েছে। ১০০রও কম আসন যেতে পারে কনজারভেটিভদের দখলে।

বিপুল সংখ্যক  আসন জিতে সরকার গড়বে লেবার পার্টি, এমনটাই জানাচ্ছেন  রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।  ৬৫০টি আসনের মধ্যে ৪০০র বেশি আসন জিততে পারে ব্রিটেনের বর্তমান বিরোধী দল। তবে লেবার পার্টির নেতা কিয়ের স্টার্মারের কপালেও চিন্তার ভাঁজ রয়েছে। কারণ অভিবাসী বিরোধিতার জন্য অ-শ্বেতাঙ্গ ভোটাররা মুখ ফেরাতে পারেন লেবার পার্টির দিক থেকে। পাশাপাশি একাধিক কট্টরপন্থী দলও ভালো ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত। উল্লেখ্য, সর্বমোট নির্বাচনে লড়ছে ৯৮টি দল। মোট ৪৫১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ব্রিটেনের নির্বাচনী প্রথা অনুযায়ী, ৬৫০টি আসনের মধ্যে ৩২৬টি জিতলেই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে একটি দল। সেই দলের প্রধানই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সরকার গঠন করতে পারে। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী প্রথম সুযোগ পাবেন সরকার গঠনের জন্য। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর নির্বাচন হয়েছিল ব্রিটেনে। সেবার ৩৬৫টি আসন গিয়েছিল বরিস জনসনের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভদের দখলে। ২০২টি আসন পেয়েছিল লেবার পার্টি।


সঙ্কটের এই সময়ে শেষবেলার প্রচারে সুনক পাশে পেয়েছেন কনজ়ারভেটিভ পার্টির অন্দরে তাঁর ‘কট্টর সমালোচক’ হিসাবে পরিচিত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে। বুধবার লন্ডনে দলীয় প্রচারসভায় জনসন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, লেবাররা ‘বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা’ পেয়ে গেলে বিপন্ন হয়ে পড়বে ব্রিটেনের গণতন্ত্র। যদিও ভোটের আগেই কার্যত হার স্বীকার করে নিয়েছেন প্রাক্তন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা ভারতীয় বংশোদ্ভূত নেত্রী সুরেলা ব্রেভারম্যান। সংবাদপত্রে লেখা নিবন্ধে তাঁর মন্তব্য— ‘‘আমাদের এখন বিরোধী আসনে বসার সময় হয়ে গিয়েছে।’’