মহিলাদের বিষয়ে নানা বিতর্কিত আইন করে আগেও সমালোচিত হয়েছে ইরান সরকার। সেই চর্চায় নতুন সংযোজন মেয়েদের বিয়ের বয়েসের সীমা কমানো। তাও এক-দুই নয় বছর কমানো হয়নি একেবারে ৯ বছর কমিয়ে দিল ইরান সরকার।
বর্তমানে সেদেশে মহিলাদের বিয়ের আইনি বয়স ১৮ বছর। কিন্তু এবার সেই আইন বদল করতে উদ্যোগী হয়েছে ইরাকের ন্যায় মন্ত্রক। মাত্র ৯ বছর বয়সেই মেয়েদের বিয়ে দেওয়া যাবে! এমন আইন পাশ করতে প্রস্তাব আনল ইরাক। এমন প্রস্তাব প্রকাশ্যে আসার পরেই ইরাকজুড়ে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। সরকারের সিদ্ধান্তে বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মহিলারা।
উল্লেখ্য মহিলাদের নিয়ে নানান বিতর্কিত আইন-কানুনের কারণেই মাহসা আমিনের মৃত্যুতে জ্বলে ওঠে ইরান। যেখানে মহিলাদের এখনো স্বামীর অনুমতি ছাড়া বিদেশে কেন দেশেও ঘোরা ফেরা অপরাধ।
এই ভাবনার পেছনে ইরাক সরকারের যুক্তি, অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া আটকানোর জন্যই এই প্রস্তাব আনা হয়েছে। জুলাই মাসের শেষদিকে এই প্রস্তাব পেশ হয় পার্লামেন্টে। তবে সেবার সাংসদদের প্রবল আপত্তিতে এই প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয় ইরাক সরকার।জানা গিয়েছে, বিয়ের আইনি বয়স কমানো নিয়ে একটি প্রস্তাব পেশ হয়েছে ইরাকের পার্লামেন্টে। সেখানে বলা হয়েছে, মেয়েদের বিয়ের নূন্যতম বয়স এবার থেকে ৯ বছর হবে। কমিয়ে দেওয়া হবে ছেলেদের বিয়ের বয়সও। ১৫ বছর বয়স হলেই আইনিভাবে বিয়ে করতে পারবে ছেলেরা।
তবে বিতর্কিত এই প্রস্তাবে সমর্থন জানান দেশের প্রভাবশালী শিয়া ধর্মগুরুরা। দেশের পার্লামেন্টেও যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে তাঁদের। এই ধর্মগুরুদের সমর্থন নিয়েই আবারও পার্লামেন্টে পেশ হয়েছে বিতর্কিত প্রস্তাব। এছাড়াও এই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ইরাকি জনতার কাছে বিকল্প রাখা হবে যেন পারিবারিক বিবাদের ক্ষেত্রে ইসলামি আইন অনুযায়ী তাঁরা সমাধান করতে পারেন। উল্লেখ্য, ইসলামি আইন বিলুপ্ত করা হয় ১৯৫৯ সালে। কিন্তু নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী ইরাকে আবার ফিরতে চলেছে ইসলামি আইনের শাসন।
নতুন প্রস্তাব পেশ হতেই ইরাকজুড়ে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ। ইউনিসেফের মতে, আইন থাকা সত্ত্বেও ইরাকের ২৮ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় ১৮ বছরের আগেই। এহেন পরিস্থিতিতে যদি নতুন করে আইন পাশ হয় তাহলে মহিলাদের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে উঠবে। নারীমৃত্যু, গার্হস্থ্য হিংসার মতো সমস্যাও আরও বাড়বে। প্রতিবাদীদের দাবি, শিশুকন্যাদের স্কুলের মাঠে মানায়, বিয়ের পোশাকে নয়। শেষ পর্যন্ত এই আইন পাশ হবে কিনা, নজর রাখছেন প্রতিবাদীরা।