• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

হামলার খবর আগেই পাকিস্তানকে দিয়েছিল ইরান, ‘গোপন চুক্তি’ বলছে রিপোর্ট

ইসলাবাবাদ, ২০ জানুয়ারি– ইরানের দ্বারা দেশে হামলার খবর আগে থেকেই জানত পাকিস্তান৷ খোদ ইরান সরকার তরফেই নাকি পাক সেনাবাহিনীকে জানানো হয়েছিল, যে ১৬ জানুয়ারি পাকিস্তানে কোন এলাকায় হামলা চালাবে তারা৷ কিন্ত্ত এই হামলার বিষয়টি যে প্রকাশ্যে আসবে তা না কি ইসলামাবাদকে জানায়নি তেহরান৷ আর সেখানেই হয়ে যায় গলদ৷ সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’-র প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, এমন তথ্যই

ইসলাবাবাদ, ২০ জানুয়ারি– ইরানের দ্বারা দেশে হামলার খবর আগে থেকেই জানত পাকিস্তান৷ খোদ ইরান সরকার তরফেই নাকি পাক সেনাবাহিনীকে জানানো হয়েছিল, যে ১৬ জানুয়ারি পাকিস্তানে কোন এলাকায় হামলা চালাবে তারা৷ কিন্ত্ত এই হামলার বিষয়টি যে প্রকাশ্যে আসবে তা না কি ইসলামাবাদকে জানায়নি তেহরান৷ আর সেখানেই হয়ে যায় গলদ৷
সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’-র প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, এমন তথ্যই উঠে এসেছে ইরানের এক স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে৷ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে থাকা ইরানীয় রাষ্ট্রদূত হাসান কাজেমি-কওমি সম্প্রতি পাকিস্তান সফরে গিয়েছিলেন৷ কয়েক জনের ধারণা, ইরানের হামলার বিষয়ে ইসলামাবাদকে অবহিত করতেই পাক সফরে গিয়েছিলেন হাসান৷ যদি সেই প্রতিবেদনগুলির দাবি সত্যি হয়, তার মানে এই দাঁড়াচ্ছে যে, ইরান এবং পাকিস্তান— উভয়পক্ষই একে অপরের উপর হামলার সম্পর্কে অবহিত ছিল৷ তবে প্রতিবেদন গুলির সত্যতা এখনও যাচাই করা যায়নি৷
ইরানের ওই স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হামলার বিষয়ে পাক সেনাকে আগাম নোটিস দিয়ে রেখেছিল ইরান সরকার৷ কিন্ত্ত ইরান যে সেই হামলার কথা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরবে, সেই কথা জানানো হয়নি ইসলামাবাদকে৷ সূত্র মারফত এমনটাই জানা গিয়েছে বলে ইরানের ওই সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে৷ ওই সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, ‘‘ইরান হামলা চালিয়ে তা জনসমক্ষে না-ই আনতে পারত৷’ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড-এর সঙ্গে যোগসূত্র থাকা একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল ১৮ জানুয়ারি লিখেছে, ‘পাকিস্তানের ওই জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলার জন্য পাকিস্তান সরকারের সমন্বয় প্রয়োজন ছিল৷’
ওই টেলিগ্রাম চ্যানেলে আরও যোগ করা হয়েছে, ‘পাকিস্তানের আক্রমণটিও দু’দেশের চুক্তির মধ্যেই ছিল৷ দুই দেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় জঙ্গি দমনে এবং স্থায়ী নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য যে সংকল্প নিয়েছে, তার জন্যই এই হামলা৷’
প্রসঙ্গত, ইরান-পাকিস্তান ‘সংঘাতের’ সূত্রপাত মঙ্গলবার থেকে৷ মঙ্গলবার পাকিস্তানের বালুচিস্তানে জঙ্গি সংগঠন জইশ আল অদলের ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালায় ইরান৷ পাকিস্তানের উপর হামলার কথা ইতিমধ্যেই স্বীকার করেছে তেহরান৷ ইরানের বিদেশমন্ত্রী স্বীকার করেছেন যে, ওই হামলার লক্ষ্য ছিল জঙ্গি সংগঠন জইশ অল অদল বা ‘আর্মি অফ জাস্টিস’-এর ঘাঁটি ধ্বংস করা৷ ইরানের দাবি ছিল, এই জঙ্গি সংগঠনের কার্যকলাপ মূলত ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত জুডে়৷ সাম্প্রতিক সময়ে ওই জঙ্গি গোষ্ঠী ইরানের মাটিতে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে বলেও সে দেশের দাবি৷ আর সেই কারণেই জইশ অল অদল সংগঠনের ঘাঁটি উচ্ছেদ করতে পাকিস্তানের ‘সবজ কোহ’ গ্রামে মঙ্গলবার হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে তেহরান৷ এই হামলার পরেই গর্জে ওঠে ইসলামাবাদ৷
ইরান এবং পাকিস্তানের হামলা-পাল্টা হামলার আবহে দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে ফাটল ধরে৷ পাক হামলাকে মোটেও ভাল চোখে দেখেনি ইরান৷ তাদের বিদেশ মন্ত্রক বৃহস্পতিবারই তেহরানে পাকিস্তানের সবচেয়ে ‘প্রবীণ এবং অভিজ্ঞ’ কূটনীতিককে তলব করেছে এবং তাঁর কাছ থেকে পাক হামলার কৈফিয়ত চাওয়া হয়৷ বায়ুসেনার মহড়াও শুরু করেছিল ইরান৷ তবে দুই দেশের মধ্যে তৈরি হওয়া সেই উত্তেজনা কমেছে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সম্মতি জানিয়েছে দুই দেশই৷