ওয়াশিংটন, ১৭ জুলাই– মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপর প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা এক সূত্রে জুড়ে দিল আমেরিকা তথা ইরানকে৷ ট্রাম্পের ওপর হামলার যে ঘটনায় উত্তাল আমেরিকা সেই ঘটনায় এবার জানা গেল হাত রয়েছে ইরানের৷ এই ঘটনায় গাফিলতির দায় নিয়েছে মার্কিন সিক্রেট সার্ভিস৷ সিক্রেট সার্ভিস জানিয়েছে, এই ট্রাম্পকে নাকি খুনের ছক কষছে ইরান! নভেম্বরের নির্বাচনের আগেই নাকি হত্যা করা হতে পারে তাঁকে৷ এনিয়ে যথেষ্ট প্রমাণ পেয়েছে তাদের হাতে৷
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুলাই, শনিবার নির্বাচনী জনসভায় গিয়ে হামলার শিকার হন ট্রাম্প৷ দলীয় কর্মীর ছোঁড়া গুলি কান ছুঁয়ে বেরিয়ে যায় বর্ষীয়ান নেতার৷ সাক্ষাৎ মৃতু্যমুখ থেকে ফিরেছেন তিনি৷ হামলাকারী টমাস ম্যাথিউ ক্রুকসকে ঘটনাস্থলেই খতম করে সিক্রেট সার্ভিসের অফিসাররা৷ তবে ট্রাম্পকে খুনের ‘মোটিভ’ এখনও পরিষ্কার নয়৷ চলছে তদন্ত৷ নিহত ক্রুকসের সঙ্গে ইরানের কোনও সম্পর্ক থাকার কথাও মার্কিন প্রশাসন বলেনি৷
প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে যে ইরানের সম্পর্ক মোটেই ভালো নয় তা কারও অজানা নয়৷ দেশের শীর্ষ সেনাকর্তা কাশেম সোলেমানির হত্যার মামলায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে ইরান৷ কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, তেহরান জানে ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরলে ফের ইরানে হামলা চালাবেন৷ ফলে আমেরিকার আসন্ন নির্বাচনের উপর কড়া নজর রাখছে ইসলামিক দেশটি৷
সংবাদ সংস্থা এপি সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে শীর্ষ দুই মার্কিন আধিকারিকের দাবি, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রশাসনের কাছে আগে থেকেই খবর ছিল যে, ট্রাম্পকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে ইরান৷ এমনকী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নানা হিংসামূলক ঘটানতেও তেহরানের হাত ছিল বলেও নাকি সতর্ক করা হয়েছিল মার্কিন গোয়েন্দাদের৷ আমেরিকার ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি এক কর্তারও দাবি, পেনসিলভ্যানিয়া সভার আগে সিক্রেট সার্ভিসকে ইরানের হুমকির বিষয়ে অবগত করা হয়েছিল৷ সেই তথ্যের ভিত্তিতেই ট্রাম্পের নিরাপত্তাও বাডি়য়ে দেওয়া হয়৷ কিন্ত্ত তার পরও ঠেকানো যায়নি শনিবারের ঘটনা৷ ফলে উঠছে নানা প্রশ্ন৷ তবে ট্রাম্পের উপর হামলায় ইরানের হাত রয়েছে কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত নয় মার্কিন প্রশাসন৷
এই খবর প্রকাশ্যে আসলেও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷ রাষ্ট্রপুঞ্জে ইরানের ইসলামিক রিপাবলিকের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমাদের চোখে ট্রাম্প এক জন অপরাধী৷ তাঁর নির্দেশে সোলেমানিকে হত্যা করা হয়েছিল৷ সেই অপরাধের জন্য তিনি শাস্তি পাবেন ঠিকই৷ কিন্ত্ত সেটা আইনের পথে৷ বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে ট্রাম্পকে শাস্তি দিতেই বদ্ধপরিকর ইরান৷’
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ড্রোন হামলায় ‘কাডস ফোর্স’-এর কমান্ডার জেনারেল কাশেম সোলেমানির মৃতু্য হয়৷ তাঁর সঙ্গেই প্রাণ হারান পিএমএফের ডেপুটি কমান্ডার আবু মেহদি আল-মুহানদিস ও বিমানবন্দরের প্রোটোকল অফিসার মহম্মদ রেদা-সহ আটজন৷ অভিযোগ, এই হামলার জন্য দায়ী তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও অন্য মার্কিন আধিকারিকরা৷ প্রসঙ্গত, তেহরানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মহলের পরমাণু চুক্তি থেকে আমেরিকাকে সরিয়ে আনার পর থেকে ইরান ও আমেরিকার মধ্যে সংঘাত বাড়ে৷ তার মাঝেই আগুনে ঘি ঢালে সোলেমানির মৃতু্য৷