মার্কিন সেনা ও কোয়ালিশন সেনাবাহিনীকে নিশানা করে ইরাক ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল- বুধবার ভােররাতে ইরাকে মার্কিন সেনাঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে উত্তেজনা বৃদ্ধি ও যুদ্ধের সম্ভাবনাকেও কয়েকধাপ বাড়িয়ে দিল।
ইরানের কম্যান্ডার জেনারেল সুলেমানিকে ট্রাম্প প্রশাসন ড্রোন হামলা চালিয়ে হত্যা করে। তার প্রতিশােধ নিতেই ইরান মার্কিন সেনা ঘাঁটিতে আক্রমণ চালায়। ইরানের টেলিভিশনের তরফে জানানাে হয়, ‘ইরাকের মার্কিন ঘাঁটি লক্ষ্য করে ইরান পনেরােটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ে। শােকার্ত দেশবাসী ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালনাের পর উৎসবে মেতে ওঠে’।
মার্কিন সেনাবাহিনীর তরফে জানানাে হয়, ‘ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন কোয়ালিশনের সদস্যদের নিশানা করা হয়েছে। ২২টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছে’। ইরানের আধিকারিকরা বলেন, ‘তেহরান যুদ্ধ চায় না। সুলেমানি খুব শক্তিশালী কম্যান্ডার ছিলেন– তাঁর শেষকৃত্য শেষ হওয়ার পর ইরান ক্ষেপণাস্ত্র ছেড়ে’।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডােনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কতটা তা মূল্যায়ণ করা হচ্ছে। সব ঠিক আছে’। তিনি বলেন, ২০১৮ সালে ইরাক সফরে তিনি আইন-আল-আসাদ বিমানঘাঁটিতে গেছিলেন। বাগদাদের উত্তরপশ্চিমে আনবার প্রদেশের আল-আসাদ বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায় ইরান- ইরাকের সেনাদের প্রশিক্ষণ দেয় মার্কিন সেনা। ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণের পদক্ষেপ হিসেবে মার্কিন সেনা ইরাকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেয়।
ইরান কর্তৃপক্ষ চালিত টেলিভিশনের তরফে জানানাে হয়, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আশি জন মার্কিন সন্ত্রাসীকে হত্যা করা হয়েছে। পাশাপাশি মার্কিন হেলিকপ্টার, সেনা সরঞ্জামের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জার্মানি, ডেনমার্ক ও নরওয়ের তরফে জানানাে হয়, তাদের কোনও সেনাবাহিনীর সদস্য ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হয়নি। এমনকি জখমও হয়নি। ইরাক প্রশাসনের তরফেও জানানাে হয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তাদের কোনও সেনা সদস্য নিহত হয়নি।
পেন্টাগনের মুখপাত্র জোনাথান হফম্যান বলেন আল – আসাদ বিমান ঘাঁটি ও এব্রিলে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালানাে হয়েছে । আমরা মার্কিন সেনাকর্মী পার্টনার ও কোয়ালিশন সদস্যদের নিরাপত্তা দেওয়ার লক্ষ্যে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে
ইরানের হামলার কয়েক ঘন্টা আগে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মার্ক এম্পার বলেছিলেন, ‘ড্রোণ হামলায় ইরানীয় কম্যান্ডার হত্যার প্রত্যুত্তর যে আসবে তা ধরে রাখা উচিত- যে কোনও পথে, যে কোনও ভাবে হামলা চালাতে পারে’।
ইরানের বিদেশমন্ত্রী মহম্মদ জাভেদ জারিফ বলেন, ‘আমরা যুদ্ধের পরিবেশকে উসকাতে চাই না, কিন্তু ইরাক যে কোনও ধরণের আগ্রাসনের জবাব দেবে। মার্কিন ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তরফে জানানাে হয়েছে, ইরাক, ইরান, ওমানের আকাশে মার্কিন বিমান যেতে দেওয়া হবে না।