• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

চিন সঙ্কটের আবহে বাংলাদেশ সরকারকে বার্তা ভারতের

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (File Photo: IANS)

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। গত বুধবার সন্ধ্যায় গণভবনে ওই সাক্ষাৎকারের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি বার্তা শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন। গত মার্চ মাসে করোনার প্রাদুর্ভাবের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই প্রথম কোনো বিদেশীকে সাক্ষাৎ দিলেন।

শ্রিংলা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেছেন, সম্পর্কের সোনালি অধ্যায় অব্যাহত থাকবে। সূত্র জানায়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের সাক্ষাতে দুই দেশের সহযোগিতা ও স্বার্থ নিয়ে কথা হয়েছে। এ বৈঠকে দু’দেশের সম্পর্ককে আরও কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায় সে বিষয়ে কথা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি ভারত ১০ টি লোকোমোটিভ ইঞ্জিন প্রদান করায় ধন্যবাদ জানান। দুই দেশের মধ্যে রেল চলাচল করছে। সহসাই দুই দেশের বিমান যোগাযোগ চালু হবে। করোনার কারণে মানুষে মানুষে যোগাযোগ বন্ধ থাকলেও কীভাবে তা শুরু করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়।

হর্ষবর্ধন শ্রিংলা প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন যে, তিনি শুভেচ্ছা ও বন্ধুত্বের বার্তা নিয়ে এসেছেন। গত মার্চে মুজিব বর্ষের উদ্ভাধনী পর্বে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যোগদান করোনার কারণে স্থগিত করতে হয়। তবে ভার্চুয়ালি দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ ছিল। কিন্তু উচ্চ পর্যায়ে সফর না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁকে পাঠিয়েছেন।

২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী দুই দেশ যৌথভাবে উদ্যাপন করবে। সূত্র আরও জানায়, গণভবনে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। কোভিড ১৯-এর মধ্যে দুই দেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা কীভাবে করা যায়, সে বিষয়ে কথা হয়েছে। এই মহামারির মধ্যে কীভাবে এক দেশ অপর দেশকে সহযোগিতা করতে পারে এবং এই রোগের ভ্যাকসিন ও চিকিৎসা সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে দুই দেশের একসঙ্গে মুজিব্বৰ্ষ উদ্যাপনের বিষয়েও কথা হয়েছে।

সূত্র জানায়, বৈঠকে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে একটি ভার্চুয়াল বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ভারতের পক্ষ থেকে। যেখানে দুই দেশের সম্পর্ক এবং বিশেষভাবে যৌথ প্রকল্পগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। এছাড়া দুই দেশের ব্যবসা বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং চিকিৎসাসেবা বিনিময়েরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আরও জানা গেছে, বৈঠকে নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের কীভাবে নিরাপদে সে দেশে ফেরত পাঠানো যায়, সে বিষয়ে কথা বলেছেন।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর এটিই ছিল সচিব হিসেবে শ্রিংলার প্রথম কোনও দেশ সফর। তাছাড়া করোনার পর দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন যোগাযোগ বন্ধ থাকার পর ভারতীয় কোনও শীর্ষ কর্মকর্তার এটিই প্রথম ঢাকা সফর। পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিতে ঢাকার বাইরে থাকায় তার সঙ্গে শ্রিংলার সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়নি। তবে তিনি ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলার বাংলাদেশ সফরকে ‘খুবই খুশির খবর’ বলে মন্তব্য করেছেন।

বুধবার বেলা ১১ টায় সিলেটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্থায়ী প্রতিকৃতি উদ্বোধনের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী। তাদের সঙ্গে আমাদের ঐতিহাসিক সম্পর্ক। আমাদের স্বাধীনতায় তারাও রক্ত দিয়েছে। সুতরাং আমরা দুই দেশ মিলে অনেক কর্মসূচি একসঙ্গে করি। খুবই খুশির খবর যে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব আমাদের দেশ সফরে এসেছেন। তাঁর সঙ্গে অনেক বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা হবে।