• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

‘ভারতের চড়া শুল্ক মানা যায় না’, জি ২০’র আগে হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

জি ২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডােনাল্ড ট্রাম্প।

জি ২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডােনাল্ড ট্রাম্প। (Photo: PMO on Twitter)

জি ২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডােনাল্ড ট্রাম্প। এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে বিভিন্ন মহল। তবে তার ঠিক আগেই নামাের সরকারকে হুঁশিয়ারি দিলেন ট্রাম্প। বললেন, ‘মার্কিন দ্রব্যে ভারত যে শুল্ক নেয় তা মেনে নেওয়া যায় না। তা অবশ্যই প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিত’।

প্রায় বছর খানেক ধরে প্রকাশ্যেই ভারত-মার্কিন অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ভারতের ‘অত্যধিক’ শুল্ক নিয়ে বারবার কথা বলতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ভারতকে ‘শুল্কের রাজা’ বলে কটাক্ষ করে ভারতীয় দ্রব্যের উপর চড়া শুল্ক বসানাের হুমকিও দিয়েছেন।

এবার জি ২০ বৈঠকের আগে ফের তিনি শুল্ক নিয়ে সরব হলেন। ট্যুইটে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির সঙ্গে বৈঠকে একটা বিষয়ে কথা বলার জন্য মুখিয়ে আছি। কয়েক বছর ধরে আমেরিকার উপর কড়া শুল্ক চাপিয়ে রেখেছে ভারত। সম্প্রতি সেই ট্যারিফ আরও বাড়ানাে হয়েছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। অবিলম্বে এটা প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিত’।

চলতি মাসের শুরুর দিকেই মার্কিন দ্রব্যের উপর শুল্ক আরও চড়িয়েছে মােদি সরকার।

১ জুন থেকে ভারতকে বিশেষ বাণিজ্যিক সুবিধা দেওয়ার বন্ধ করেছে আমেরিকা। তার জবাবে ভারত বাড়তি শুল্ক বসিয়েছে আমেরিকা থেকে আমদানিকৃত হওয়া পণ্যের ওপরে। আগামী শুক্রবার জাপানে জি ২০ বৈঠকের একফাঁকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির সঙ্গে আলােচনায় বসতে পারেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডােনাল্ড ট্রাম্প। তার আগে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ভারতকে এই বাড়তি শুল্ক তুলতেই হবে।

ট্রাম্প টুইট করেছেন, প্রধানমন্ত্রী মােদির সঙ্গে আলােচনায় বসার জন্য আমি আগ্রহী। ভারত বহুদিন ধরে আমেরিকার পণ্যের ওপরে উঁচু হারে শুল্ক বসিয়ে রেখেছে। কিছুদিন আগে শুল্ক আরও বাড়িয়েছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। শুল্ক তুলতেই হবে।

জুন মাসের শুরুতে ভারত সরকার আমেরিকার মােট ২৮টি পণ্যের ওপরে কাস্টমস ডিউটি বাড়িয়েছে। তার মধ্যে আছে বাদাম, আপেল, ডাল ও আখরােট। আমেরিকার যে কৃষকরা ট্রাম্পের ভােটার, তারা মূলত ওই ফসলগুলি চাষ করেন।

গত বছরই ভারতে শুল্কের হার নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন ট্রাম্প। ভারতকে বিদ্রুপ করে তিনি বলেন, ‘ট্যারিফ কিং’। কিন্তু ভারতের অনুরােধ সত্ত্বেও ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়মের ওপরে শুল্ক কমাতে রাজি হয়নি আমেরিকা।

আগে ভারত শুল্ক না দিয়ে ৬০০ কেটি টাকার পণ্য আমেরিকায় রফতানি করতে পারত। জুন মাস থেকে সেই সুবিধাও বন্ধ হয়েছে।

গত মঙ্গলবার ভারতে এসেছিলেন আমেরিকার বিদেশ সচিব মাইক পম্পিও। তিনি প্রধানমন্ত্রী মােদি ও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করার পাশাপাশি বলেন, ভারতের বাজারে আমেরিকাকে আরও বেশি করে প্রবেশাধিকার দিতে হবে।

বৃহস্পতিবার সকালে মােদি জাপানে পৌঁছেছে। জি ২০ বৈঠক বাদে আগামী তিনদিনে মেদি ১০টি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গেও আলােচনা হবে। তবে ট্রাম্পের সঙ্গে মােদির বৈঠকের ওপরেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন পর্যবেক্ষকরা। কারণ সম্প্রতি দুটি বিষয় নিয়ে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে গুরুতর মতবিরােধ দেখা দিয়েছে।

প্রথমত, ভারতে আমেরিকার পণ্যের ওপরে বাড়তি শুল্ক নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন অসন্তুষ্ট। দ্বিতীয়ত, রাশিয়া থেকে ক্ষেপনাস্ত্র কেনা নিয়েও ভারতের ওপর অসন্তুষ্ট আমেরিকা। মােদি ও ট্রাম্প আলােচনায় বসে এই দুটি বিরােধ মেটাতে কী পদক্ষেপ নেন, সেদিকেই লক্ষ্য রাখছেন পর্যবেক্ষকরা।