লাগাতার হিংসার ঘটনা, সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগে উত্তপ্ত বাংলাদেশ। এই উত্তাপের আঁচ এসে লেগেছে ভারতেও। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে ভারত। এই আবহে ঢাকায় পৌঁছন ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরণ করে মিস্রীর বিমান। তাঁকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের বিদেশ দফতরের মহাপরিচালক ইশরাত জাহান।
একদিনের বাংলাদেশ সফরে সে দেশের বিদেশসচিব মহম্মদ জসিমউদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন বিক্রম মিস্রী। সচিব পর্যায়ের বৈঠক হওয়ার পর মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন মিস্রী। তারপর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিদেশ উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হোসেন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে তাঁর।
গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের সরকারের পতন ঘটেছে। সেই ঘটনার পর এই প্রথম ঢাকা সফরে গেলেন ভারতের বিদেশসচিব। দিল্লি এবং ঢাকার মধ্যে কূটনৈতিক স্তরে বৈঠক হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে কোন কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে, তা নিয়ে আগ্রহ রয়েছে দুই দেশেরই। বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের মতে, ৫ আ গস্ট -এর পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কে গুণগত পরিবর্তন হয়েছে। তা মেনে নিয়েই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
হাসিনা সরকারের পতনের পর সেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হিন্দু মন্দিরে ভাঙচুর, আগুন লাগিয়ে দেওয়ার মতো অভিযোগও উঠেছে। সম্প্রতি হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। সেই ঘটনার প্রতিবাদে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছে হিন্দু সংগঠনগুলি, যার প্রভাব পড়েছে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের উপর। হাসিনার পতনের পর সে দেশে অঘোষিত প্রধান রাজনৈতিক দল হিসাবে উঠে এসেছে খালেদা জিয়ার দল বিএনপি। হাসিনার ভারতে সাময়িক আশ্রয় নেওয়া নিয়ে তাদের অসন্তোষের কথা রবিবার ভারতীয় দূতাবাসে জমা দেওয়া স্মারকলিপিতে জানিয়েছে তারা।
এই সমস্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার দায়িত্ব বাংলাদেশের। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। এই বিষয়ে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের।’