গত ১৯ মার্চ মার্কিন স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ১২ মিনিটে ক্যালিফোর্ণিয়ার অরেঞ্জ কাউন্টির সান্টা আনা পুলিশের কাছে একটি ফোন অসে। ফোনের ওপার থেকে ছেলেকে খুন করার কথা বলেন সরিথা। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান পুলিশকর্মীরা। তাঁরা সেখানে গিয়ে দেখেন বিছানার উপর কিশোরের নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ডিজনিল্যান্ড থেকে কিনে আনা নানা উপহার। ছেলেকে খুন করার পর নিজেও ওষুধ খেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন সরিথা। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দু’জনকেই হাসপাতালে নিয়ে যায়।
পুলিশের বিবৃতি অনুযায়ী, স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিতসার পর অভিযুক্ত মহিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে খুন, শিশু নিপীড়ন, ও চরম বিশৃঙ্খলার অভিযোগ আনা হয়েছে। অরেঞ্জ কাউন্টি আদালতে ইতিমধ্যেই মামলার শুনানিও শুরু হয়েছে। মামলার শুনানির সময় অরেঞ্জ কাউন্টির ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি টড স্পিটজার বলেন, ‘একটি শিশুর জীবন কখনওই বাবা মায়ের ঝামেলার শিকার হওয়া উচিত নয়। শিশুর সবচেয়ে নিরাপদ স্থান তার মা-বাবার কোল। তিনি আরও বলেন, ক্রোধ মানুষকে ভালোবাসতে ভুলিয়ে দেয়। মানুষ ভুলে যায় কে আপনজন। ছেলেকে ভালোবাসায় আগলে রাখার বদলে তার গলা কেটে হত্যা করেছেন মা, যিনি ওকে পৃথিবীর আলো দেখিয়েছিলেন।’
জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে বিবাহবিচ্ছেদ হয় অভিযুক্ত মহিলার। আদালতের অনুমতিতে তাঁদের ছেলে থাকত বাবার কাছে। তবে নির্দিষ্ট সময় অন্তর ছেলেকে নিজের কাছে রাখার অনুমতি পেয়েছিলেন সরিথা রামারাজুও। বিবাহবিচ্ছেদের পর ক্যালিফোর্ণিয়া ছেড়ে ভার্জিনিয়ার ফেয়ারফ্যাক্সে বসবাস শুরু করেন সরিথা। তবে গত বছর থেকে ছেলেকে নিজের কাছে পাকাপাকিভাবে রাখা নিয়ে প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে প্রায়শই বিবাদ হতো রামারাজুর। সম্প্রতি তিনি ছেলেকে কাছে পান। এরপর সরিথা ডিজনিল্যান্ডে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। সেখানে তিনদিন কাটানোর পর যে মোটেলে তাঁরা উঠেছিলেন সেখানেই নিজের ছেলের গলা কেটে তাঁকে খুন করেন বলে অভিযোগ। এরপর তিনি ৯১১ নম্বরে ফোন করে জানান ছেলেকে খুন করার কথা। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, সেদিনই ছেলেকে স্বামীর কাছে ফেরত দেওয়ার কথা ছিল ওই মহিলার।
ছেলেকে নিজের কাছে রাখার জন্য দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করেছেন সরিথা। স্বামীর বিরুদ্ধে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাজে ব্যবহারের অভিযোগও এনেছেন। সরিথার অভিযোগ, বাবার ভয়ে তাঁর সঙ্গে ঠিক করে কথা বলতে পারত না ছেলে। যদিও এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সরিথার স্বামী প্রকাশ রাজু।