এফবিআই প্রধানের দায়িত্বে ভারতীয় বংশোদ্ভূত কাশ প্যাটেল

ফের এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিককে বড় দায়িত্ব দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-এর প্রধান পদে বসলেন কাশ্যপ ‘কাশ’ প্যাটেল। এর আগে ঠিক ছিল কাশ সিআইএ প্রধান হবেন। যদিও সেই পদের জন র‍্যাটক্লিফকে বসান ট্রাম্প। দীর্ঘদিন হাউস পারমানেন্ট সিলেক্ট কমিটিতে কাউন্টার টেররিজমের উপদেষ্টা পদে কাজ করেছেন কাশ।

কাশ প্যাটেলের পুরো নাম কাশ্যপ প্রমোদ প্যাটেল। যদিও আমেরিকার প্রশাসনিক মহলে তিনি পেন্টাগনের ‘কাশ’ নামেই খ্যাত। ট্রাম্পের একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত প্যাটেল। কাশের বাবা উগান্ডার ও মা তানজানিয়ার হলেও নিউইয়র্কেই জন্ম কাশের। ১৯৭০ সাল থেকে তাঁর পরিবার আমেরিকা চলে আসে। নিউইয়র্কেই আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। পরে অবশ্য ফ্লোরিডায় চলে যান।

ফ্লোরিডায় রাজ্য ও ফেডারেল আদালতে ক্লায়েন্টদের প্রতিনিধিত্ব করে পাবলিক ডিফেন্ডার হিসাবে তাঁর কেরিয়ার শুরু করেন। পূর্ব আফ্রিকা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের মামলায় বিশেষজ্ঞ হিসেবে বিচার বিভাগে প্রসিকিউটর হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। ২০১৯ সালে হোয়াইট হাউসে কাউন্টার টেররিসম ডিরেক্টরেট অফ দ্য ন্যাশনাল সিকিওরিটি কাউন্সিল বা এনএসসির সিনিয়র ডিরেক্টর পদে ছিলেন কাশ।


বেসামরিক আইনজীবী হিসাবে প্রতিরক্ষা বিভাগে তাঁর মেয়াদকালে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অভিযানে জোর দেন কাশ। কংগ্রেসম্যান ডেভিন নুনেসের নজরে পড়েন এই তরুণ আইনজীবী। নুনেস হাউস ইন্টেলিজেন্স কমিটির চেয়ারম্যান থাকাকালীন প্যাটেলকে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী সিনিয়র কাউন্সেল হিসাবে নিয়োগ করেছিলেন।

কাশ প্যাটেল ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদেই শিরোনামে এসেছিলেন। ২০১৬ সালে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার নিয়ে এফবিআইয়ের তদন্তে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে বিতর্কিত জিওপি মেমোর খসড়া তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। আমেরিকান মিডিয়া একে ‘কাশ মেমো’ হিসেবে উল্লেখ করে। ৪৪ বছর বয়সী প্যাটেল ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রীর চিফ অব স্টাফ হিসেবে ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা নীতিতে বড় ভূমিকা নিয়েছেন।

কাশ খোলাখুলিভাবে এফবিআই সংস্কারের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। রক্ষণশীল শন রায়ান শোতে একটি সাক্ষাত্কারে, প্যাটেল এফবিআইয়ের গোয়েন্দা-সংগ্রহের কার্যক্রম ভেঙে দেওয়া এবং এর সদর দফতর পুনর্নির্মাণসহ উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছিলেন।

তিনি বলেছিলেন, আমি প্রথম দিনেই এফবিআই হুভার বিল্ডিং বন্ধ করে দেব এবং পরের দিন ডিপ স্টেটের যাদুঘর হিসেবে এটি আবার খুলব। সেই বিল্ডিংয়ে কাজ করে এমন ৭০০০ কর্মচারীকে নিয়ে যাব এবং অপরাধীদের তাড়াতে তাদের আমেরিকা জুড়ে পাঠাব। প্যাটেল ট্রাম্পের প্রস্তাবিত অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডির অধীনে এফবিআইয়ের মূল নীতি – বিশ্বস্ততা, সাহসিকতা এবং সততা পুনরুদ্ধারে কাজ করবেন।

সেনেটে অনুমোদন পেলে প্যাটেল হবেন প্রথম ভারতীয়-আমেরিকান এবং দক্ষিণ এশীয় যিনি এফবিআইয়ের নেতৃত্ব দেবেন। গোটা বিষয়টি ভারতীয়-আমেরিকান সম্প্রদায়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসাবে চিহ্নিত হবে। সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ একটি পোস্ট করে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘আমি এটা ঘোষণা করতে পেরে গর্বিত যে কাশ্যপ ‘কাশ’ এফবিআই-এর পরবর্তী পরিচালক হিসেবে কাজ করবেন।’