ইসলমাবাদ, ১৫ জুলাই– আগেই হারিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর পদ৷ এবার হারাতে হতে পারে দলটিকেও৷ কথা হচ্ছে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের৷ বর্তমানে জেলে বন্দি পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধান ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই- ইনসাফকে নিষিদ্ধ করার পথে হাঁটতে চলেছে সেদেশের সরকার! এমনটাই জানালেন পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাতুল্লা তারার৷ তাঁর কথায়, আইএমএফের সঙ্গে পাকিস্তানের চুক্তিতে সাবোতাজের চেষ্টা করেছিল পিটিআই নেতারা৷ এছাড়াও বিদেশি অনুদান থেকে সাইফার কাণ্ড- নানা ক্ষেত্রেই দেশের বিপদ ডেকে এনেছে ইমরানের দল, এমনটাই দাবি পাক মন্ত্রীর৷
পিটিআই নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে দু’দশক পরে আবার পাকিস্তানে শাসক বনাম সুপ্রিম কোর্ট সংঘাতের আবহ তৈরি হতে পারে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন৷ প্রসঙ্গত, শুক্রবার সে দেশের শীর্ষ আদালত কার্যত নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত খারিজ করে জানিয়েছিল, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরানের পিটিআই দলগত ভাবেই পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ২৩টি সংরক্ষিত আসন পাওয়ার যোগ্য৷
পাক শীর্ষ আদালতের শুক্রবারের ওই রায়ের পরেই প্রতিবাদে বিক্ষোভে নেমেছেন শাসক পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ় (পিএমএলএন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)-র নেতা-কর্মীরা৷ যায় জেরে পাক পঞ্জাব, খাইবার-পাখতুনখোয়া এবং সিন্ধ প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় অশান্তির ঘটনাও ঘটেছে৷ কয়েকটি স্থানে পিটিআইয়ের সঙ্গে শাসক জোটের সমর্থকদের সংঘর্ষের খবরও পাওয়া গিয়েছে৷ সংঘাতেই সেই আবহেই ইমরানের দলকে নিষিদ্ধ করার বার্তা দিলেন পাক তথ্যমন্ত্রী৷
বহুদিন ধরেই একাধিক অভিযোগে জেলবন্দি রয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান ৷ জেল থেকেই চলতি বছরের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে তাঁর দল সমর্থিত নির্দল প্রার্থীরা৷ সর্বোচ্চ আসনও পেয়েছে তারাই৷ যদিও সরকার গড়ার জন্য নির্ধারিত আসন মেলেনি ইমরান সমর্থিত প্রার্থীদের৷ এহেন পরিস্থিতিতে গত বছর থেকেই জল্পনা চলছে, নিষিদ্ধ করে দেওয়া হতে পারে ইমরানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ পাকিস্তানকে৷
আতাতুল্লা জানিয়েছেন, “পিটিআইয়ের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে আমাদের কাছে৷ আইএমএফের সঙ্গে চুক্তি করতে গিয়েও সাবোতাজ করেছে পিটিআই৷ এছাড়াও দাঙ্গা বাঁধানো, বিদেশি অনুদানে অস্বচ্ছতা, সাইফার মামলা, দেশের তথ্য ফাঁস- একাধিক নিদর্শন রয়েছে যেখানে পাকিস্তানের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে পিটিআই৷”
সেই জন্যই এবার ইমরানের দলের বিরুদ্ধে ক্যাবিনেটে প্রস্তাব আনতে চলেছে পাকিস্তান সরকার৷ এছাড়াও প্রয়োজন হলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে সরকার, যেন ইমরানের দলকে নিষিদ্ধ করা যায়৷ উল্লেখ্য, আপাতত দেশের প্রধান বিরোধী দল হল ইমরানের পিটিআই৷ ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২৩টি আসন ফিরে পেতে পারে ইমরানের দল৷ ফলে সরকারে থাকা শাহবাজ শরিফের দলের সঙ্গে তাদের আসন সংখ্যার ব্যবধান কমবে৷ তৈরি হবে পিটিআইয়ের নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠনের সম্ভাবনাও৷ সেই জন্যই তড়িঘড়ি পিটিআইকে নিষিদ্ধ করতে উঠে পড়ে লেগেছে পাক সরকার৷