জাতির উদ্দেশে ভাষণ বাতিল ইস্তফার পথে ইমরান খান, সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ

আগামী রবিবার পাক সংসদে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ঘিরে ভোটাভুটি হওয়ার কথা। কিন্তু তার আগেই একের পর এক সঙ্গী প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করার কথা প্রকাশ্যেই ঘোষণা করেছে।

এই পরিস্থিতিতে ভোটাভুটির আগেই ইমরান খান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে পারেন বলে জল্পনা তুঙ্গে।

সব মিলিয়ে ইমরান খানের কুর্সি বাঁচানোর লড়াই ক্রমশ আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। এর মধ্যেই এবার তাঁর জাতির উদ্দেশে ভাষণ বাতিল হয়ে গেল।


তবে কি সরাসরি পদত্যাগের কথা ঘোষণা করবেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান? এদিকে জরুরি অবস্থা ঘোষণার পথে হাঁটতে পারেন ইমরান খান।

কারণ তিনি নাকি কোনওভাবেই নিজের কুর্সি ছাড়তে রাজি নন। ফলে এই চরম পদক্ষেপ ছাড়া তাঁর হাতে আর কোনও উপায় নেই।

অন্যদিকে জঙ্গি হামলায় ট্যাঙ্ক জেলায় খাইবার পাখটুনখাওয়া প্রদেশে ৬ জন নিরাপত্তা রক্ষী সহ ২২ জন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। গুরুতর আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সব মিলিয়ে পাকিস্তানে অস্থিরতা চরমে। এখন দেখার সংকটে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থায় থাকা ইমরান ইস্তফা দেন, নাকি অন্য কোনও সংকটের মধ্যে পড়তে হয় পাকিস্তানকে।

বুধবার সকাল থেকেই ইমরান খানের ইস্তফার খবর নিয়ে সরগরম পাকিস্তানের রাজনীতি। এরই মধ্যে বিকেলে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন পাক সেনাপ্রধান।

আর ঠিক সেই সাক্ষাতের পরমুহূর্তেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ বাতিল করে দেন ইমরান খান। অথচ সকালেই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন ইমরান।

একদিকে তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন, একে একে তাঁর দলের বিধায়করাও সঙ্গ ত্যাগ করছেন। গদি বাঁচাতে হাতে গোনা কয়েকদিন মাত্র সময়।

এমতাবস্থায় কোনও মতেই নিজের পদ ছাড়তে নারাজ ইমরান খান। শেষ বল পর্যন্ত ব্যাট চালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিলেন প্রাক্তন এই পাক ক্রিকেটার।

তথ্য বলছে, ইমরান খান ও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে ক্রমশ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে মুত্তাহিদা কোয়ামি মুভমেন্ট পাকিস্তান।

তারা নাকি প্রধান বিরোধী পাকিস্তান পিপলস পার্টি বা পিপিপি’র সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে। আর তাতেই কপাল পুড়েছে প্রধানমন্ত্রীর। 

কারণ, এতদিন এই এমকিউএম-পি ই ইমরানের সব থেকে বড় ভরসা ছিল। এই ঘটনায় উচ্ছ্বসিত পিপিপি’র চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি এ নিয়ে একটি ট্যুইট করেছেন তিনি।

লিখেছেন, ‘সঙ্ঘবদ্ধ বিরোধীরা এবং এমকিউএম একটি সমঝোতায় পৌঁছে গিয়েছে। এমকিউএম-পি’র রাবতা কমিটি এবং পিপিপি সিইসি এই সমঝোতাকে অনুমোদন করবে। পাকিস্তানকে অভিনন্দন।’

জানা যাচ্ছে, পাকিস্তান পার্লামেটের নিম্ন কক্ষে ইতিমধ্যেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে ফেলেছেন ইমরান খান ও তাঁর সরকার।

বিরোধীরা ইতিমধ্যেই ইমরান খানকে অনাস্থায় হারানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন বিরোধীরা।

সেই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার ঠিক আগের রাতে যে সমস্ত ঘটনা ঘটেছে, তা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর জন্য মোটেই সুখবর নয় ।

পাক সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে তাদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়েছে।

কয়েক সেকেন্ডের ওই ভিডিয়োয় ইমরান খানকে এমন কিছু কথা বলতে শোনা যাচ্ছে, যা এই মুহূর্তে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

সংশ্লিষ্ট ভিডিয়োয় ইমরান খানকে বলতে শোনা যায়, মানুষের বিশ্বাস আস্থা কারও উপর থেকে চলে যেতেই পারে। যে অনাস্থা প্রদর্শনের যথাযথ রাস্তাও রয়েছে।

এমন সংকট তো যে কোনও সময়েই হতে পারে। কিন্তু, এখন কেন এমন সংকট তৈরি হল? এর পিছনে বিদেশি ষড়যন্ত্র রয়েছে।’

প্রশ্ন হল, কোন বিদেশি ষড়যন্ত্রের কথা বলতে চাইছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী? সেই বিষয়ে তিনি কিছুই খোলসা করেননি।