রিয়াধ, ১ মার্চ – রমজান চলাকালীন সৌদি আরবের মসজিদগুলিতে ‘ইফতার’ নিষিদ্ধ করা হল। এই বছর ১১ মার্চ থেকে রমজান মাস শুরু হওয়ার কথা, মোটামুটিভাবে শেষ হওয়ার কথা ৯ এপ্রিলের মধ্যে। তার আগেই এল শাহজাদা মহম্মদ বিন সলমন এই নির্দেশ দেন। এখনও বাদশা পদে না বসলেও দেশ চালাচ্ছেন মহম্মদ বিন সলমনই।
এবার মসজিদে ইফতার নিষিদ্ধ হল। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে সৌদি আরবের ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রক মসজিদের কর্মচারীদের জন্য একটি বিশেষ নির্দেশাবলী জারি করেছে। রমজান মাসে সৌদি আরবের সমস্ত মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের সেই নির্দেশাবলী মেনে চলতে হবে। নির্দেশ অনুযায়ী, ইফতার ভোজের আয়োজনের জন্য কোনও আর্থিক অনুদান সংগ্রহ করা যাবে না। যারা রোজা করেন, তাঁদের ইফতারের জন্য সৌদি আরবের মসজিদগুলিতে এই ধরনের আর্থিক অনুদান সংগ্রহ করা হত , যা আর করা যাবে না। বস্তুত, মসজিদের ভিতর ইফতার ভোজের আয়োজনই করা যাবে না।
দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছেন শাহজাদা মহম্মদ বিন সলমন। মহিলাদের আরও বেশি সামাজিক স্বাধীনতা দেওয়া, দেশের বাণিজ্যকে উৎসাহ দিতে নয়া বিনোদন পার্ক, অত্যাধুনিক শহর তৈরি করছেন।
সৌদি আরবকে ইসলামি দুনিয়ার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ধরা হয়। রমজান মাসে মসজিদগুলিতে এতদিন ধরে চলে আসা এই প্রথার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার কারণ হিসেবে সৌদির ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রক জানিয়েছে মসজিদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন। প্রতি বছরই ইফতারের কারণে মসজিদের ভিতরের অংশ নোংরা হয়। এই কারণেই এই নয়া নির্দেশ জারি করা হয়েছে। মন্ত্রক সাফ জানিয়েছে, মসজিদের অভ্যন্তরে ইফতার খাওয়ার সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে কোনও আপোস করা যাবে না।
ইমাম ও মুয়াজ্জিনদেরই মসজিদ অঙ্গনে এই ভোজ আয়োজনের তদারকি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভোজ শেষ হওয়ার পরই জায়গাটি যাতে পরিষ্কার করে দেওয়া হয়, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব নিতে হবে তাঁদের। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে উদ্বেগের কারণেই মসজিদের ভিতরে ইফতার আয়োজন করা উচিত নয়। কোনও অস্থায়ী কক্ষ, তাঁবু বা এই ধরনের কোনও অস্থায়ী ব্যবস্থা না করে, ইফতারের ভোজের জন্য মসজিদ প্রাঙ্গনে উপযুক্ত জায়গা তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই জায়গাতেই ইমাম ও মুয়াজ্জিনের অধীনে রোজা ভাঙা যাবে। তবে, খাওয়া শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে জায়গাটি পরিষ্কার করে দিতে হবে।
এর পাশাপাশি, দেশের সমস্ত মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে রমজান মাসে ছুটি নেওয়া যাবে না। এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে মসজিদে অনুপস্থিত থাকা চলবে না। সময়ানুবর্তিতা বজায় রাখতে হবে।
শুধু ইফতার নয়, মসজিদ প্রাঙ্গণের ভিতর ক্যামেরার ব্যবহারও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইমাম এবং উপাসকদের নামাজ পড়া ক্যামেরা বন্দি করা হলে, তাদের শ্রদ্ধাবোধে খামতি দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সৌদির ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রক। শুধু তাই নয়, সোশ্যাল মিডিয়া-সহ কোনও গণমাধ্যমেই নামাজ সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না বলে, স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে মন্ত্রক। তাই, নামাজের সময় মসজিদ প্রাঙ্গনে কোনও ধরনের ক্যামেরা নিয়ে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। কাউকে নামাজের ছবি তুলতে দেখা গেলে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।