১৯৪৫ সালের ৩০ এপ্রিল বার্লিন বাঙ্কারে গুলি করে আত্মহত্যা করেন অ্যাডলফ হিটলার। সঙ্গী ছিলেন ইভা ব্রাউন। যাঁকে দু দিন আগে বিয়ে করেছিলেন ফুয়েরার। সেই মৃত্যুর পর কেটে গিয়েছে আটটা দশক। তবু তাঁকে নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই গোটা বিশ্বের। তার সম্পর্কে নতুন কোনও খবর প্রকাশ হলেই রীতিমতো হইচই পড়ে যায়। এবার সেই উত্তেজনার পারদ চড়লো হিটলারের ব্রিটিশ বান্ধবী ইউনিটি মিটফোর্ডের ডায়রি থেকে। কেমন ছিলেন নাৎসি সর্বাধিনায়ক ? হিটলার সম্পর্কে মিটফোর্ড তাঁর ডায়েরিতে লিখেছেন, ‘ও খুব মিষ্টি এবং সমকামী।’ এই বয়ানে এই ডায়রি ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
ইতিহাসের পাতা উল্টোলে দেখা যায় ফুয়েরারের বান্ধবীর সংখ্যা কম ছিলো না। তিনের দশকে ইউনিটি মিটফোর্ডের সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিলো হিটলারের। তাঁদের প্রেমের বয়ান ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করেছিলেন মিটফোর্ড। সেই ডায়েরি সম্প্রতি উদ্ধার হয়ে প্রকাশ পেয়েছে। সেই ডায়রির পাতায় পাতায় হিটলারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা বলতে গিয়ে ইউনিটি লিখেছেন, ‘হিটলারের ভালোবাসা পাওয়ার জন্য তিনি উন্মুখ ছিলেন। এছাড়াও ডায়রির পাতায় তাঁকে বারবার লিখতে দেখা গিয়েছে, হিটলার ছিলেন খুব মিষ্টি এবং সমকামী।’ ১৯৩৫ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত দুজনের মধ্যে দেখা হয়েছিল ১৩৯ বার। প্রথম দেখা থেকেই তিনি প্রেমে পড়ে যান হিটলারের। ডায়েরিতে আরও বলা হয়েছে, ব্রিটিশ নাগরিকদের মধ্যে তাঁর মতো করে আর কেউই হিটলারের এতটা কাছে আসতে পারেননি।
১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর হিটলারের ব্রিটিশ প্রেমিকার ডায়েরির পাতা শেষ হচ্ছে। যেদিন পোল্যান্ড দখল করেছিলো জার্মানি। তারপরেই যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর। এই ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে হিটলারের প্রেমিকা আবিষ্কার করেছিলেন, তাঁর প্রিয় দেশ জার্মানি ও মাতৃভূমি ব্রিটেন পরস্পরের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত। মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি। এই আঘাত সইতে না পেরে নিজের মাথাতেই গুলি করেন ইউনিটি। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছিলো আত্মহত্যার চেষ্টা। একটি বুলেট আটকে বাম মস্তিষ্ক ভয়ঙ্করভাবে জখম হয়েছিলো। সেই অবস্থায় ব্রিটেনে ফিরে আসেন মিটফোর্ড। ১৯৪৮ সালে মাত্র ৩৩ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তাঁর।
এত বছর পর এই হারানো ডায়রির প্রত্যাবর্তন নিয়ে চর্চা তুঙ্গে উঠেছে। মনে করা হচ্ছে এই ডায়েরি থেকে হিটলারের অজানা দিক উন্মোচিত হবে। এই সঙ্গে প্রশ্নও উঠেছিলো এই ডায়রি আদৌ সত্যি কিনা তা নিয়েও। তবে হাতের লেখা কালি ও ইউনিটির হাতের লেখা খুঁটিয়ে দেখে গবেষকরা নিশ্চিত এই ডায়েরি নকল নয়, পুরোপুরি আসল।