• facebook
  • twitter
Sunday, 24 November, 2024

হাসিনার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ঢাকায় ফাঁস হল চক্রান্ত

বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা যেহেতু মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত, তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ঝুলে আছে।

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল চিত্র

গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের দিন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্র ও জনতার বিজয় মিছিলে আওয়ামী লীগের দুষ্কৃতীদের গুলিতে তাঁর স্বামী নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে এক মহিলা শেখ হাসিনা সহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন। এখন তিনমাস পরে তাঁর সেই স্বামী থানায় হাজির হয়ে জানালেন যে, তাঁর অজান্তেই স্ত্রী তাঁকে ‘মৃত’ দেখিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন অসৎ উদ্দেশ্যে। এই ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার আশুলিয়ায়।

খবরে প্রকাশ, গত ২৪ অক্টোবর কুলসুম বেগম নামে এক মহিলা তাঁর স্বামী মহম্মদ আল আমিন মিয়াকে হত্যার অভিযোগ এনে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মামলা করেছিলেন। তাতে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ ১৩০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। ঢাকার আশুলিয়া থানায় মামলাটি তদন্তের জন্য নথিভুক্তও হয়েছিল। এদিকে মহিলার স্বামী আল আমিনের দাবি, ঘটনার দিন তিনি মৌলভী বাজারের জুড়ি উপজেলায় ছিলেন। তাঁর মারা যাওয়ার প্রশ্নই নেই। ওই ব্যক্তি নিজের স্ত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগ তুলেছেন।

প্রসঙ্গত শেখ হাসিনাকে নিজেদের হেফাজতে আনতে ইউনূস সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যে গত রবিবার আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল। শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করার জন্য লাল সতর্কতা জারিতেও তৎপর হয়ে উঠেছে ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।

বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা যেহেতু মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত, তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ঝুলে আছে। কিন্তু তিনি বাংলাদেশের বাইরে চলে যাওয়ায় আমরা আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলকে অনুরোধ জানিয়েছি, যাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এখন প্রশ্ন উঠছে, হাসিনা যেহেতু ভারতে রয়েছেন, তাহলে ভারত সরকারের কাছে আবেদন না জানিয়ে কেন ইন্টারপোলের দ্বারস্থ হল বাংলাদেশ সরকার। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী, রাজনৈতিক মামলার ক্ষেত্রে দু’দেশই নিজেদের অবস্থান অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এক্ষেত্রে হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরানোর ব্যাপারে শেষ কথা বলবে ভারত সরকার। অন্যদিকে ইন্টারপোল এরকম কাউকে দেশে ফেরানোর আগে সেদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিও বিবেচনা করে। দেশে ফিরে জীবনহানির আশঙ্কা থাকলে ইন্টারপোল তাঁকে তৃতীয় কোনও দেশে অন্তরীণ করতে পারে। এবং তাও করা হতে পারে যদি সেই ব্যক্তি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ সরকারকে প্রমাণ করতে হবে যে, শেখ হাসিনা নিজেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, তাঁকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়নি। কিন্তু এক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিমানবাহিনীর বিমানই তাঁকে ভারতে পৌঁছে দিয়েছে। ফলে হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ এক্ষেত্রে টিকবে না। উপরন্তু হাসিনার বিরুদ্ধে এই মিথ্যা খুনের মামলার চক্রান্ত ফাঁস হওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের দাবিও যে লঘু হয়ে পড়বে, সেবিষয়ে সন্দেহ নেই।